বিনা বিচারে এক বছর ধরে জেলবন্দি, কেন চুপ বন্দিমুক্তি কমিটি? প্রশ্ন তুললেন পার্থ

বিনা বিচারে এক বছর ধরে জেলবন্দি, কেন চুপ বন্দিমুক্তি কমিটি? প্রশ্ন তুললেন পার্থ

কলকাতা: শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত বছর ২৩ জুলাই নাকতলার বাড়ি থেকে গ্রেফতার হয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ রবিবার পূর্ণ হয় তাঁর গ্রেফতারির এক বছর৷ সোমবার দীর্ঘ এক বছরের বন্দিদশা নিয়ে ফের ক্ষোভ উগড়ে দিলেন তিনি। রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘এক বছর বিনা বিচারে জেলে বন্দি রয়েছি। আমাকে জোর করে আটকে রাখা হয়েছে।’’ গ্রেফতারির এক বছর পূর্ণ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বন্দিমুক্তি আন্দোলনকারীদেরও নতুন করে বার্তা দেন পার্থ। ক্ষোভের সুরেই তিনি বলেন, ‘‘এক বছর বিনা বিচারে আছি। বন্দিমুক্তি আন্দোলনকারীদের জিজ্ঞাসা করবেন। তাঁরা মুখ খুলছেন না।’’

শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডের তদন্তে নেমে গত বছর ২২ জুলাই দক্ষিণ কলকাতার নাকতলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে হানা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর ২৩ জুলাই মধ্যরাতে গ্রেফতার হন প্রাক্তন মন্ত্রী। তার পর তদন্তের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে জমা হয়েছে অভিযোগের পাহাড়৷ বর্তমানে তিনি প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের পহেলা বাইশ ওয়ার্ডের দু’নম্বর সেলের বাসিন্দা। গ্রেফতার হওয়ার পরই মন্ত্রিত্ব হারান পার্থ। এমনকী দল থেকেও ছেঁটে ফেলা হয়৷  তাঁকে সাসপেন্ড করে তৃণমূল৷ সব কিছু হারিয়ে এভাবে বন্দি থাকতে থাকতে স্বভাবতই ভেঙে পড়েছেন তিনি। এ নিয়ে অতীতেও তাঁর গলায় ঝরে পড়েছিল আক্ষেপের সুর৷  বন্দিদশা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন। বন্দিদশা থেকে মুক্তির জন্য ‘বন্দি মুক্তি আন্দোলনকারী’দের উদ্দেশে বার্তাও দিয়েছিলেন৷ তবে কোনও লাভ হয়নি৷ উল্টে ইডির পর সিবিআইয়ের হাতেও গ্রেফতার হন পার্থ।

সোমবার আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে ঢোকার মুখে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বন্দিমুক্তি আন্দোলনকারীদের কথা বলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। ক্ষোভের সুরে তিনি বলেন, ‘‘এটা সুজাত ভদ্রদের জিজ্ঞাসা করুন। বন্দিমুক্তি আন্দোলনকারীদের জিজ্ঞাসা করবেন। এক বছর বিনা বিচারে আছি। আজ তাঁরা মুখ খুলছেন না।’’ এর পরেই মানবাধিকার কর্মী সুজাত ভদ্র বলেছেন, ‘‘উনি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের কারণে বন্দি নন।’’এর আগে পার্থ বলেছিলেন, ‘‘যাঁরা বন্দিমুক্তি আন্দোলন করেন, তাঁদের আমি খুঁজে বেড়াচ্ছি। তাঁরা কোথায়?’’ তবে পার্থের আহ্বানে সাড়া দিতে নারাজ গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি (এপিডিআর)। এ কথা স্পষ্ট করেছিলেন এপিডিআরের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিৎ শূর। তিনি সাফ জানিয়েছিলেন, ‘‘পার্থবাবুর বিচার হোক। নিরপরাধ হলে মুক্তি পাবেন। তবে তিনি এক জন নিপীড়ক, তাঁর পাশে থাকতে পারছি না আমরা। তাঁর বিরুদ্ধে জনগণের টাকা তছরুপের অভিযোগ রয়েছে। উনি প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত। ওই অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। এই ধরনের মানুষের পাশে থাকতে পারি না আমরা।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − twelve =