পঞ্চায়েতের মনোনয়ন ঘিরে সংঘাত! মিনাখাঁ থেকে বড়শুল, জেলায় জেলায় শাসকের বাধার মুখে বিরোধীরা

পঞ্চায়েতের মনোনয়ন ঘিরে সংঘাত! মিনাখাঁ থেকে বড়শুল, জেলায় জেলায় শাসকের বাধার মুখে বিরোধীরা

মনোনয়নের তৃতীয় দিনেও হিংসা! অশান্তির ছবি জেলায় জেলায়। সিপিআইএমের দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সিপিএম কর্মীদের মারধরের পাশাপাশি ভাঙচুর চালানো হয় একাধিক মোটর বাইকে।  সোমবার মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে এইভাবেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁ।

বিডিও অফিসে মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য এদিন সকালে দলীয় কার্যালয়ে জড়ো হয়েছিলেন সিপিআইএমের কর্মীরা। অভিযোগ, দুপুর নাগাদ আচমকাই একদল তৃণমূল কর্মী সিপিআইএমের দলীয় কার্যালয়ের ভিতর ঢুকে হামলা চালায়। সিপিআইএম কর্মীদের মারধর করার পাশাপাশি প্রায় ১০ টি মোটর বাইক ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। পার্টি অফিসের ভিতরে ঢুকে গুরুত্বপূর্ণ নথি তছনছ করে দেওয়ার পাশাপাশি চেয়ার-টেবিলসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশের সামনে ঘটনা ঘটলেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয় নি বলে অভিযোগ করেছেন রাজ্য সিপিআইএম মুখপাত্র সায়নদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় ৩ জন সিপিআইএম কর্মী মিনাখাঁ গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলেও জানা গেছে। 

নমিনেশন দাখিলের তৃতীয় দিনে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠলো মুর্শিদাবাদের রানীনগর। কংগ্রেস কর্মীর গ্রেফতারের প্রতিবাদে কংগ্রেসের পথ অবরোধকে কেন্দ্র করে অশান্তির সূত্রপাত। স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার রানীনগর ১ নম্বর ব্লকের সক্রিয় কংগ্রেস কর্মী মইনুল ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সোমবার সেই ঘটনার প্রতিবাদে রানীনগরের শেখ পাড়া এলাকায় পথ অবরোধে সামিল হয় স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব। 

অভিযোগ, কংগ্রেসের অবরোধ চলাকালীন লাঠিসোঁটা নিয়ে মিছিল করে সেখানে এসে হাজির হয় তৃণমূলের কর্মীরা। এরপরই সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে দুই দল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় রানীনগর থানার বিশাল পুলিশবাহিনী। উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় লাঠিচার্জ করে পুলিশ। দীর্ঘ চেষ্টার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।  এখনও থমথমে রয়েছে ওই এলাকা। অন্যদিকে মনোনয়ন পেশকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বর্ধমান। সোমবার বর্ধমান দু’নম্বর ব্লক অফিসে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান সিপিএমের পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থীরা। তাঁদের মনোনয়ন পত্র জমা দিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে শুরু হয়ে যায় খণ্ডযুদ্ধ। ব্লক অফিসের সামনেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।

বড়শুল ২ নম্বরে মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে রীতিমত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশ। পুলিশের সামনেই চলে দফায় দফায় ইটবৃষ্টি। ইটের আঘাতে আহত হন শক্তিগড় থানার বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী। শক্তিগড়ের ওসির মাথায় আঘাত লেগেছে বলে জানা গিয়েছে। আশান্তির ঘটনায় দু-পক্ষেরই কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ।

এদিকে, মনোনয়ন জমা দিতে না পারায় ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান সিপিআইএমের কর্মী সমর্থকেরা। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে চলে বিক্ষোভ। প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে চলে সেই কর্মসূচি। মনোনয়ন জমা দিতে না পারার জন্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় সিপিআইএম নেতৃত্ব। অবরোধের জেরে বেশ কিছুক্ষণের জন্য অবরুদ্ধ হয়ে পরে জাতীয় সড়ক। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 − 2 =