করাচি: সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অবস্থান নিয়ে নানা প্রশ্নে বেশ কিছু দিন ধরেই ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি। করক জেলায় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে এক হিন্দু মন্দির ধ্বংস করার ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই আন্তর্জাতিক মহলে আসতে শুরু করেছে নিন্দার ঝড়৷ সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এবার কড়া সিদ্ধান্ত নিল ইসলামাবাদ।
অবিলম্বে ধ্বংস করা হিন্দু মন্দির নতুন করে তৈরি করে দিতে হবে, এমনটাই রায় দিয়েছে পাক সুপ্রিম কোর্ট। এ প্রসঙ্গে শীর্ষ আদালতের ৩ সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, ‘‘ইভ্যাকুই প্রপার্টি ট্রাস্ট বোর্ডকে (EPTB) নতুন করে ওই মন্দির তৈরি করে দিতে হবে।’’ শুধু তাই নয়, মন্দির নির্মাণের সমস্ত খরচ এই কাজের চক্রান্তকারী মৌলবি মহম্মদ শরিফের কাছ থেকে আদায় করার নির্দেশও দিয়েছে পাক সুপ্রিম কোর্ট।
এদিন ইপিটিবিকে মন্দির গড়ে দেওয়ার কথা বলা হলে আদালতে তারা জানায়, এর জন্য যথেষ্ট টাকা তাদের কাছে নেই। তারপরই বিস্ফোরক জবাব আসে বিচারপতির আসন থেকে। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘আপনাদের নিজেদের ভবন বানানোর টাকা আছে। আর মন্দির পুনর্নির্মাণের টাকা নেই?’’ এখানেই শেষ নয়, এদিন হিন্দু মন্দির ধ্বংসের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন পাক সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি গুলজার আহমেদ। তিনি বলেন, ‘‘খাইবার পাখতুনখাওয়ার ঘটনা বিশ্বের দরবারে পাকিস্তানকে লজ্জিত করেছে।’’ সেই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মন্দির ও গুরুদ্বারের তথ্য সম্বলিত রিপোর্টও তলব করেছেন বিচারপতি গুলজার আহমেদ৷
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ৩০ ডিসেম্বর পাকিস্তানের করক জেলায় বহু পু্রোনো একটি হিন্দু মন্দিরের উপর হামলা চালায় এক দল ধর্মান্ধ মানুষ। ভাঙচুরের পর আগুনও লাগিয়ে দেওয়া হয় ওই মন্দিরে। জানা গেছে, কিছুদিন আগেই ওই প্রাচীন মন্দির সংস্কারের অনুমতি দিয়েছিল পাকিস্তানের স্থানীয় প্রশাসন, আর তারপরেই এই ভাঙচুর চলে। পুলিশ কর্মীদের উপস্থিতিতেই এই জঘন্য ঘটনা ঘটে বলে জানা গিয়েছিল পাক সূত্রের খবরে। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় যুক্ত মোট ১০৯ জনের মধ্যে ৯২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্থানীয় উলেমা-ই-ইসলাম নামের এক দলের সমর্থকরা এই কাজ করেছিলেন।