কলকাতা: ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কি আদৌ পাক গুপ্ত চর রয়েছে? সত্য উদঘাটনে সিবিআইকে অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। সোমবারের পর এদিন বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর এজলাসে ছিল এই মামলার শুনানি। সেই সময়ই আদালতে চাঞ্চল্যকর দাবি করে সিবিআই। কেন্দ্রীয় সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে, এমনকি আন্তর্জাতিক স্তরে এই অভিযোগ গুরুতর। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা জানাচ্ছে, জাল নথি দিয়ে উত্তর পূর্ব ভারত সহ অন্যান্য রাজ্য থেকে জাল নথি দিয়ে বাহিনীতে নিয়োগ হচ্ছে। ডোমিসাইল সার্টিফিকেট ও জাতিগত শংসাপত্র নিয়েও আদালতে চাঞ্চল্যকর দাবি করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। তাদের দাবি, মহকুমা শাসকের সই করা সার্টিফিকেট পাওয়া গিয়েছে, অথচ তিনি তা স্বীকার করছেন না। শুধু ডোমিসাইল নয় এমন প্রার্থীদের ওবিসি সার্টিফিকেটও দিয়েছেন মহকুমা শাসক।
পশ্চিমবঙ্গে উত্তর ২৪ পরগনায় জেলা থেকে এমন কিছু নথি উদ্ধার হয়েছে। তবে সেনা বাহিনীতে নয় কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনীতে এই ধরনের নিয়োগের হদিশ পেয়েছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, এখনও পর্যন্ত চারজনের অবৈধ নিয়োগের হদিশ মিলেছে। শুধু এই রাজ্য নয়, প্রতিবেশী রাজ্যের সীমান্তবর্তী এলাকাতেও এই ধরনের কার্যকলাপ হচ্ছে বলে আদালতে জানিয়েছে সিবিআই।
সিবিআই আদালতে জানিয়েছে, ‘‘এখনও পর্যন্ত বিদেশি নাগরিকের এইভাবে চাকরি পাওয়া প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷ তবে সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এই অভিযোগের তদন্তের ক্ষেত্রে ইন্টারপোলের সাহায্যের প্রয়োজন হতে পারে। এটা জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড় বিপদের কারণ।’’ বেশ কিছু সরকারি অফিসার এই চক্রে যুক্ত রয়েছে বলে সিবিআই-এর ইঙ্গিত। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের নজরে একজন মহকুমা শাসক রয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে।
শুনানি পর্ব শেষে বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের নির্দেশ, ‘‘এই রাজ্যে আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে। ফলে এখানের বাহিনীতে নিয়োগের একটা সুযোগ রয়েছে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভিন রাজ্যের নাগরিকরা জাল ডোমিসাইল সার্টিফিকেট চক্রের মাধ্যমে বাহিনীতে ঢুকে পড়ছে। দ্রুত এফআইআর করে এখনই তদন্ত শুরু করুন। যতদিন না সিবিআই এই তদন্তের রিপোর্ট দিচ্ছে ততদিন বিষ্ণু চৌধুরীর নিরাপত্তা দেবে পুলিশ।’