নয়াদিল্লি: ভারতবর্ষের ঘরে ঘরে খাবার নষ্ট না করার পাঠ শেখানো হয় ছোটো থেকেই। কথায় বলে ভাত স্বয়ং মা লক্ষ্মী, তাই একে ফেলে নষ্ট করতে নেই। কিন্তু বাস্তবে শিশুশিক্ষার সেই পাঠ জীবনে কতটা কাজে লাগাতে পারে মানুষ, সে প্রশ্নটা তর্কসাপেক্ষ। বিয়েবাড়ি হোক বা কোনো অন্য অনুষ্ঠান, শুধু এদেশেই নয়, বিশ্ব জুড়ে প্রতিদিন যে বিপুল পরিমাণ খাবার নষ্ট করা হয় তা রীতিমতো উদ্বেগজনক। সেই উদ্বেগ বাড়িয়েই এবার সামনে এল আরো এক পরিসংখ্যান।
২০১৯ সালে বিশ্ব জুড়ে প্রায় ৯০ কোটি টন খাবার স্রেফ আবর্জনার বাক্সে ফেলে দেওয়া হয়েছে, এমনটাই জানা গেছে সমীক্ষার রিপোর্টে। এই নষ্ট খাবারের পরিমাণ গোটা বছরে মোট উৎপাদিত খাবারের প্রায় ১৭ শতাংশ। এদিন রাষ্ট্রসংঘের পরিবেশ বিভাগের (United Nations Environment Programme) বার্ষিক খাদ্য বাতিলের রিপোর্ট ( Food Waste Index Report 2021) থেকে এই তথ্য সামনে এসেছে। বলা বাহুল্য, এতে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বিশেষজ্ঞদের কপালে। কীভাবে খাবার নষ্ট না করার বিষয়ে মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি করা যায়, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।
বিশ্ব জুড়ে এক বছরকালে নষ্ট খাবারের এই পরিমাণ ভারতে মোট উৎপাদিত খাদ্যশস্য, তৈলবীজ, আখজাতীয় দ্রব্যের পরিমাণের সমান। জানা গেছে, রেস্টুরেন্ট কিংবা অনুষ্ঠান বাড়ি নয়, ভারতে প্রতিবছর শুধুমাত্র গৃহস্থের হেঁশেল থেকেই নষ্ট হয় অন্তত ৫০ কেজি খাবার। আফগানিস্তানে এই পরিমাণ ৮২ কেজি, নেপালে ৭৯ কেজি শ্রীলঙ্কায় ৭৬ কেজি, পাকিস্তানে ৭৪ কেজি এবং বাংলাদেশে ৬৫ কেজি। দক্ষিণ এশিয়া, ইউরোপ এবং আমেরিকার অধিকাংশ এলাকার থেকে নষ্ট খাবারের পরিমাণ পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলিতে অনেক বেশি বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। এমতাবস্থায়, চোখ রাখতেই হয় রাষ্ট্রসংঘের খাদ্য এবং কৃষি সংস্থার রিপোর্টে। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী শুধু ২০১৯ সালেই পৃথিবীতে স্রেফ না খেতে পেয়ে মারা গেছেন প্রায় ৭০ কোটি মানুষ। রিপোর্টে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন একাধিক বিশেষজ্ঞ।