বৃদ্ধের শরীরে ডিম্বশয়! রিপোর্ট দেখে চক্ষু চড়কগাছ চিকিৎসকের

বৃদ্ধের শরীরে ডিম্বশয়! রিপোর্ট দেখে চক্ষু চড়কগাছ চিকিৎসকের

কলকাতা:  শরীর পুরুষের। কিন্তু, রয়েছে ডিম্বাশয়! এমন আশ্চর্য ঘটনায় চক্ষু চড়কগাছ চিকিৎসকদের৷ বালুরঘাট শহরে হাসপাতাল মোড় সংলগ্ন এলাকার এক বেসরকারি ল্যাবের রিপোর্ট ঘিরে শোরগোল৷ 

আরও পড়ুন- মুরগি ২৫০ পার, পাঁঠার দামও চড়া, পাল্লা দিচ্ছে মাছ-সবজি, পকেটে ছ্যাঁকা মধ্যবিত্তের

জানা গিয়েছে, মালদা জেলার বাসিন্দা, পেশায় অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী অমিয় চক্রবর্তী দীর্ঘ দিন ধরেই কিডনির সমস্যার ভুগছিলেন৷ চিকিৎসক তাঁকে আলট্রাসোনিগ্রাফি করতে বলেন৷ টিকিৎসকের পরামর্শ মেনে বালুরঘাটের রঘুনাথপুর এলাকায় একটি ল্যাব থেকে আলট্রাসোনোগ্রাফি করান ওই বৃদ্ধ। এর পর রিপোর্ট নিয়ে যান চিকিৎসক শান্তনু দাসের কাছে৷ সেই রিপোর্ট দেখে চক্ষু ছানাবড়া চিকিৎসকের৷ আল্ট্রাসোনোগ্রাফি রিপোর্টে লেখা হয়, ওই বৃদ্ধের ওভারিতে সিস্ট রয়েছে৷ যা সাধারণতা মহিলাদের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে৷ পুরুষ শরীরে কী ভাবে ডিম্বাশয় এল? প্রশ্ন উঠতেই নড়েচড়ে বসে ল্যাব কর্তৃপক্ষ৷ 

এদিকে, অমিয় চক্রবর্তী বিষয়টি জানতে পেরেই ছুটে যান ল্যাবে৷ ওই ল্যাবের তরফে  দেবব্রত দাস জানান, এটা আসলে প্রিন্টিং মিসটেক৷ ভুলবশত কিডনির জায়গায় ওভারি লেখা হয়েছে৷ পরে অবশ্য সঠিক রিপোর্ট দেয় ল্যাক কর্তৃপক্ষ৷ তবে এই ঘটনা জানাজানি হতেই প্রশাসনের কাছে কড়া নজরদারির দাবি জানিয়েছে শহরবাসী৷ 

এ প্রসঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, “এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। অভিযোগ প্রমাণ হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” বালুরঘাটে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ছত্রাকের মতো গজিয়ে উঠেছে ল্যাব। সেই সকল ল্যাবগুলির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়  নানা ধরনের অভিযোগও উঠছে। কিন্তু অভিযোগ, জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে কোনও বন্দোবস্তই করা হয়নি৷ 

৮৪ বছরের অমিয় চক্রবর্তী জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরেই কিডনির সমস্যায় ভুগছেন৷ তাঁর ভাইপোর বাড়ি বালুরঘাট৷ তিনি চিকিৎসা করাতে মালদা থেকে এখানে এসেছেন। সেখানে এক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের ওষুধ খান তিনি। তাঁর পরামর্শেই আলট্রাসোনোগ্রাফি করান। সেই রিপোর্ট দেখেই হতচিকত হয়ে যান চিকিৎসক৷ জানতে পারেন ভুল রিপোর্ট এসছে৷  তিনি বলেন, ‘‘এমন অনেক ভুল আছে, যার জন্য ভালো মানুষও ভুল চিকিৎসায় মারা যেতে পারেন। তাই এখান থেকে আর কোনও রিপোর্ট করাবো না।”  তবে এই ঘটনার পর নিজেদের ভুল স্বীকার করে নিয়েছে ল্যাব কর্তৃপক্ষ৷ তাদের দাবি, ‘ছাপার ভুল হয়েছে৷ কিন্তু আমাদের রিপোর্টে ভুল হয় না৷’