ভারতীয়দের মধ্যে বাড়ছে ওবেসিটির সমস্যা, বিশেষ পরামর্শ দিল আইসিএমআর

কলকাতা: বর্তমানে ওবেসিটি একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনিয়মিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস সমস্যাকে বাড়িয়ে তুলছে দিন দিন। আর সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য, এই সমস্যার শিকার হচ্ছেন…

কলকাতা: বর্তমানে ওবেসিটি একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনিয়মিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস সমস্যাকে বাড়িয়ে তুলছে দিন দিন। আর সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য, এই সমস্যার শিকার হচ্ছেন ভারতীয়রাও। পরিসংখ্যানের গ্রাফ যে হারে বাড়ছে, তাতে সময় থাকতে সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আইসিএমআর।

ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর সমীক্ষা বলছে, প্রায় ২৫ শতাংশ ভারতীয় স্থূলত্ব বা বাড়তি ওজনের সমস্যায় ভুগছেন। কারণ হিসাবে আইসিএমআর জানাচ্ছে, বর্তমানের অসংযম জীবনযাপন, শরীরচর্চার অভাব এবং সঠিক ভাবে ডায়েট মেনে না চলা। এখনকার ব্যস্ত জীবনে, বেশির ভাগই সুষম আহারে অভ্যস্ত নন। তা ছাড়া, ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই জায়গায় বসে কাজ, সমস্যাকে বাড়িয়ে তুলছে আরও।

আইসিএমআর জানাচ্ছে, শুধু শহরাঞ্চল নয়, গ্রামের দিকেও মানুষজনের মধ্যে স্থূলত্ব বাড়ছে। পরিশ্রমবিমুখতা, জীবনযাত্রায় অসংযমই এর কারণ। আগে মানুষজন শারীরিক পরিশ্রম করতেন বেশি, এখন তা খুবই কম হয়। কায়িক পরিশ্রম কম হওয়ায় মেদের আধিক্য বাড়ছে। তা ছাড়া খাওয়াদাওয়ায় অনিয়ম, নেশার প্রকোপ তো রয়েছেই।

ওবেসিটি এক সময়ে ধনী দেশগুলিতে বেশি দেখা গেলেও বর্তমানে নিম্ন এবং মধ্য আয়ের দেশগুলিতেও প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী পুরুষদের মধ্যে ওবেসিটিতে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা ১৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৩ শতাংশ হয়ে গিয়েছে। মহিলাদের মধ্যে তা ২১ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সমীক্ষা বলছে, বয়স এবং ওবেসিটির মধ্যে একটি সরাসরি সম্পর্ক আছে, তা পুরুষ এবং মহিলাদের উভয়ের ক্ষেত্রেই এক।

ওবেসিটি থাকলে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা বেড়ে যায়। কম বয়সে ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। স্থূলতার সঙ্গে যোগ রয়েছে হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যার। হাঁপানির বিভিন্ন রিস্ক ফ্যাক্টরের মধ্যে অন্যতম ওবেসিটি। স্তন, কোলন, কিডনি এবং অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের সঙ্গে স্থূলত্বের যোগ রয়েছে। নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার হওয়ার পিছনেও মেদের হাত রয়েছে। দেহে বাড়তে থাকা মেদ না পুড়লে, তা জমতে থাকে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে। তখনই বেড়ে যায় নানা রকম শারীরিক সমস্যা ও রোগভোগ। তাই সুস্থ থাকতে নিজেকে ফিট রাখুন।

আইসিএমআরের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একবারে বেশি ওজন ঝরাতে গেলে অন্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ওজন কমাতে হবে ধীরে ধীরে। ধীর গতিতে মেদ ঝরলে শরীরও তার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবে।

প্রতিদিনের ডায়েটে অন্তত ১০০০ কিলোক্যালোরি রাখতে হবে। সে জন্য পরিমিত কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, প্রোটিন, ভিটামিন খেতে হবে। শরীরচর্চা বেশি হলে কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিন মাপ মতো বুঝে খেতে হবে। সবুজ শাকসব্জি বেশি করে খান। ভাজাভুজি, তেলমশলাদার খাবার, নরম পানীয়, চকোলেট, আইসক্রিম, যে কোনও মিষ্টি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। কম মশলাযুক্ত খাবার খান। প্যাকেটে লেখা মিথ্যা প্রতিশ্রুতি নয়, প্যাকেটজাত খাবার কেনার আগে ভাল করে খুঁটিয়ে প্যাকেটে কী লেখা আছে পড়ে নিন। দরকার হলে চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের সঙ্গে পরামর্শ করে তবেই কিনুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *