লখনউ: ইংরেজি বর্ণমালার প্রথম অক্ষর ‘A’ (এ)৷ আর ইংরেজি অক্ষর চেনার প্রথম ধাপ হল-‘এ’ ফর ‘অ্যাপল’, ‘বি’ ফল ‘বল’৷ কিন্তু, চিরাচরিত সেই নিয়ম ভেঙে নতুন ছকে শব্দের সঙ্গে পরিচয় করানোর কৌশল নিল উত্তর প্রদেশের একটি স্কুল৷ অভিনব কৌশলে শেখানো হল ‘এ’ ফর ‘অর্জুন’, ‘বি’ ফর ‘বলরাম’৷ সেই স্রোতেই, এখানে ‘সি’ ফর ক্যাট নয়৷ বদলে শেখানো হল চাণক্যের নাম৷ এই ভাবে ইংরেজি বর্ণমালার ২৬টি অক্ষর দিয়েই ভারতের পৌরানিক কিংবা ঐতিহাসিক কোনও না কোনও চরিত্রের সঙ্গে পরিচয় ঘটানো হয়েছে কচিকাচাদের৷
আরও পড়ুন- ধর্না দিয়েই চাকরি? ৮৫০ জনকে নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিচারপতি
লখনউয়ের আমিনাবাদ ইন্টার কলেজে ছোটদের জন্য এই অভিনব বর্ণমালা তৈরি করা হয়েছে৷ উদ্দেশ্য, ছোট থেকেই শিশু মনে দেশের ঐতিহ্য, ধর্মচেতনা, ইতিহাস ও পৌরাণিক চরিত্রগুলি সম্পর্কে ধারনা তৈরি করা এবং তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা সৃষ্টি করা। ইংরেজি অক্ষরগুলিকে কাজে লাগিয়ে দেশের ঐতিহাসিক ও পৌরাণিক চরিত্রগুলিকে ছোটদের দরবারে পৌঁছ দিতে চেয়েছে। এই ‘অক্ষর ধামে’, ডি-তে রয়েছেন ধ্রুব, ই-তে একলব্য, আই-তে ইন্দ্র এবং এইচ ফর হয়েছে হনুমান।
ইন্টার কলেজের অধ্যক্ষ সাহেব লাল মিশ্র সংবাদমাধ্যমকে বলেন, শৈশব থেকেই পড়ুয়াদের মনে ভারতীয় সংস্কৃতি সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা সৃষ্টি করাই পাঠ্যবই সংস্কারের উদ্দেশ্য। তাঁর কথায়, ‘‘ভারতীয় সংস্কৃতি সম্পর্কে ছাত্রছাত্রীদের ধারণা খুবই কম। ওদের জ্ঞান বাড়ানোর জন্যেই আমরা এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।’’ ইংরেজির পাশাপাশি হিন্দি অক্ষরের ক্ষেত্রেও একই পন্থা নেওয়ার ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে ইংরেজির চেয়ে হিন্দিতে অক্ষরের সংখ্যা অনেক বেশি৷ তাই তালিকা প্রস্তুত করতে সময়ও বেশি লাগছে।
পৌরাণিক ও ঐতিহাসিক চরিত্রগুলির নামের সঙ্গেই শুধু পরিচয় ঘটানো নয়, পাঠ্যে তাঁদের অতি সংক্ষিপ্ত পরিচয়ও দেওয়া হয়েছে। যেমন অর্জুনের পরিচয় দিয়ে লেখা হয়েছে ‘মহান যোদ্ধা’, বলরামের পরিচয় ‘শ্রীকৃষ্ণের ভাই’, চাণক্যকে উল্লেখ করা হয়েছে মহান শিক্ষক হিসাবে৷ যিনি আবার বড় উপাসকও৷ আবার ধ্রুব হলেন আকাশের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র৷ এভাবেই ‘আর’–এ আছেন মহান যোদ্ধা রামচন্দ্র, ‘টি’তে আছে আয়ুর্বেদ ঔষধির রানি তুলসী, ‘ডব্লিউ’–তে রয়েছে ওয়াটার বা জলের কথা। ছবিতে পদ্মপাতায় উপবিষ্ট রয়েছেন দেবী গঙ্গা। বর্ণমালার শেষ শব্দ ‘জেড’–এর পাশে রয়েছে গদাধারী জাম্বুবানের ছবি। তিনি একজন রামভক্ত।
উল্লেখ্য, লখনউয়ের এই স্কুলটি ১২৫ বছরের পুরনো। ১৮৯৭ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ছোটদের বইতে স্কুলের এই নতুন শব্দ ধারা চর্চার কেন্দ্রে উঠে এসেছে।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>