কলকাতা: রাস্তাঘাটে চলতে ফিরতে দশ কুড়ি টাকা পড়ে থাকলে ঝপ করে তুলে নেন অনেকেই। কেউ লোকলজ্জার খাতিরে ইচ্ছে থাকলেও এড়িয়ে যান পড়ে থাকা টাকা। কিন্তু টাকার অঙ্কটা যদি একেবারে ৫০ হাজার হয়? নেহাত অবহেলা করে সেই টাকা এড়িয়ে যাওয়া কি সম্ভব? রাজ্যের বিধানসভার দিকে তাকালে কিন্তু এমন কাণ্ড সম্ভব বলেই বোধ হয়।
জানা গেছে, বিধানসভায় হঠাৎই প্রায় ৫০ হাজার টাকা খুঁজে পাওয়া গেছে, কিন্তু চার-দিন কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত সেই বিশাল অঙ্কের টাকার কোনো মালিকের হদিশ পাওয়া যায় নি। ফলে ইতিমধ্যে এই রহস্যজনক টাকা নিয়ে ঘনিয়েছে একাধিক বিতর্ক। টাকা আসলে কার? উঠেছে প্রশ্ন।
বাংলার একটি দৈনিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত বুধবার কর্মব্যস্ত বিধানসভার মাঝে হঠাৎই মেঝে থেকে কুড়িয়ে পাওয়া যায় এক থোক টাকা। এটি বিধানসভার জনৈক এক কর্মীর নজরে প্রথম আসে। সমস্ত ৫০০ টাকার নোট মিলিয়ে দেখা যায় টাকার পরিমাণ ৫০ হাজার। জরুরি কাগজপত্র নিয়ে বিধানসভার লবির মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করার সময়েই বিষয়টি নজরে আসে ওই কর্মীর। স্বভাবতই ওই কর্মী টাকার মালিকের সন্ধান করতে শুরু করেন৷ নিরাপত্তারক্ষীদের কাজে তিনি জিজ্ঞাসা করেন এ বিষয়ে তাঁরা কিছু জানেন কিনা। কিন্তু কোনও সুরাহা না মেলায় বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আনেন বিধানসভার ওই কর্মচারী। জানা গেছে, কুড়িয়ে পাওয়া সেই ৫০ হাজার টাকা আপাতত রয়েছে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ও সচিব অভিজিৎ সোমের হেফাজতে। উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ সহ ওই টাকা সংগ্রহ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বস্তুত, বুধবারের পর কেটে গেছে চার দিন। এক সঙ্গে এতগুলি টাকা যাঁর খোয়া গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত তিনি কেন টাকার কোনো খোঁজ করলেন না তা নিয়ে বিস্মিত বিধানসভার কর্মীরাও। এই দাবিহীন রহস্যময় টাকা নিয়ে এখন সরগরম রাজ্য বিধানসভার অন্দরমহল। কোনও রকম অনৈতিক কাজের সঙ্গে এই টাকার সম্পর্ক রয়েছে কিনা, দানা বেঁধেছে সেই প্রশ্নও। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, একুশের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখন কার্যত উত্তাল রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি। এই আবহে ভোট সংক্রান্ত কোনও বেআইনি কারবারের জন্যই কি বরাদ্দ ছিল ওই টাকা? আর তাই ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়েই এত টাকার কোনো মালিকের হদিশ পাওয়া যাচ্ছে না? বলা বাহুল্য, উত্তর থাকবে অজানাই।