নয়া দিল্লি: লকডাউনের চলাকালীন বিভিন্ন সমস্যার মুখে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। এমনকী, রোজগার বন্ধ থাকার ফলে আর্থিক সমস্যার কথাও শোনা গেছে। এই দুর্দিনে সরকারি, বেসরকারি উদ্যোগ ছাড়াও ব্যক্তিগতভাবেও অনেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন সেই সমস্ত অসহায় মানুষদের উদ্দেশ্যে। পাশাপাশি কেউ কেউ রাস্তার কুকুরদের খাওয়ানোর কথাও ভেবেছেন। নয়ডার বিদিত শর্মা এমনই এক তরুণ। লকডাউন জারি হওয়া থেকেই রোজ দু'বেলা রাস্তার কুকুরদের খেতে দিচ্ছেন তিনি। বর্তমানে ৭০০টিরও বেশি কুকুরের জন্য খাবার বন্দোবস্ত করছেন তিনি।
নয়ডার ২৮ বছরের বিদিত শর্মা দিল্লির একটি অটোমোবাইল সংস্থায় কর্মী পদে রয়েছেন। গত চার বছর ধরেই রাস্তার কুকুরদের খাবার দেন। লকডাউনে সেই কাজ বহুগুণ বেড়েছে তাঁর। তিনি বলেন, 'গত চার বছর ধরে আমি রাস্তার কুকুরদের খেতে দিচ্ছি। লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর আমার অফিস বন্ধ থাকায় এই সময়টাকে কাজে লাগাচ্ছি। আরও বেশি করে যুক্ত থাকতে পারছি এই কাজে। অফিস, রেস্তোরাঁ, মল খোলা থাকলেই রাস্তার কুকুরদের খাবার জোটে। কিন্তু লকডাউনের জন্য সেসব বন্ধ।'
প্রথমে চারটি কুকুর দিয়ে শুরু করলেও ধীরে ধীরেই বেড়েছে সেই সংখ্যা। তাঁর কথায়, 'বর্তমানে সেই সংখ্যা ৭০০ হয়েছে। এছাড়াও ৪৫টি কুকুর ছানা রয়েছে এই তালিকায়। লকডাউন চলাকালীন রোজ দু'বেলা খেতে দিতাম ওদের। কিন্তু এখন আমার অফিস চালু হওয়ায় সময়ের অভাব হয়। তাই নিজে হাতে শুধুমাত্র রাতের খাবারটুকুই খাওয়াতে পারি। দিনের বেলা যাতে ওদের খাবার দেওয়া হয়, সেই জন্য একজনকে দেখভালের জন্য রেখেছি।' বেশিরভাগ সময় নিজেকেই হাত লাগাতে হয় তাঁকে। নিজে হাতে রাঁধেন। বিদিত বলেন, 'রোজ ১০০ কিলোগ্রাম চালের ভাত রাঁধতে হয় আমাকেই। ওই ভাতের মধ্যে সোয়াবিন ও প্রায় ২০০ টির মতো ডিম থাকে। রোজ একই খাবার খেতে দিই না ওদের। কোনওদিন রুটি, কোনওদিন ডালিয়া তৈরি করি ওদের জন্য।'
বিদিতের এই প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকেই। কেউ আবার সাধ্যমতো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তাঁর দিকে। তিনি বলেন, 'সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টের মাধ্যমে বেশ কিছু মানুষ আমার এই কাজে আমাকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। কেউ টাকা দিয়ে সাহায্য করছেন। কেউ আবার চালের দাম কম নিয়ে সহযোগিতা করছেন।'