‘দগদগে ইতিহাসের ঘা’ আসলে মানুষের স্টেটমেন্ট, কণ্ঠে রূপম বিদ্রোহ

‘দগদগে ইতিহাসের ঘা’ আসলে মানুষের স্টেটমেন্ট, কণ্ঠে রূপম বিদ্রোহ

কলকাতা:  শিল্পের সঙ্গে সমাজ, পরিস্থিতি, অবস্থার এক সুনিবিড় সম্পর্ক আছে। কখনও তা ব্যক্তিগত, কখনও আবার তা-ই হয়ে ওঠে সর্বজনের। 'আমার কথা' না কি 'আমাদের কথা', সেই প্রশ্নের উত্তর একমাত্র শিল্পীই দিতে পারেন। তবে রূপম ইসলামের সম্প্রতি প্রকাশিত 'দগদগে ইতিহাসের ঘা' গানটিতে যে বর্তমান সময়ের কথা বলা হয়েছে, বলা বাহুল্য। প্রকাশিত হয়েছে গানটির ভিডিও।

'যুদ্ধ যাদের হাতের পাঁচ/ মানুষে মানুষে হানাহানি/ এটাই ওদের খুড়োর কল/ এভাবে বেচছে শয়তানি'। এর আগেও সমকাল গর্জে উঠেছে তাঁর কলমে-কণ্ঠে। দিল্লিকাণ্ড নিয়ে গোটা দেশে যখন জল্পনা, তখনই প্রকাশিত হল 'দগদগে ইতিহাসের ঘা'। গানটি সম্পর্কে রূপম ফেসবুক লাইভে বলেছেন, 'একদিন সন্ধেবেলা আমি সময় পেলাম। আমার মনে হল, আমার লেখা দরকার। আমার লেখার দায়িত্ব আছে। নিশ্চয়ই তার আগে থেকে আবেগ জন্মাচ্ছিল। গান তো আবেগ থেকে তৈরি হয়। গান যেমন একটা অনুশীলন, তেমনই আবেগের উদ্গীরণও বটে। অনুশীলন এবং আবেগঘন মনোভাব তৈরি না হলে গান তৈরি হয় না। নয়তো কৃত্রিমভাবেও তৈরি করা যায়।'

সময়, পরিস্থিতি ঘা দেয়। সেখান থেকেই তৈরি হতে পারে শিল্পকর্ম। কিন্তু এই মুহূর্তের বহুআলোচিত 'দগদগে ইতিহাসের ঘা' গানটি কীভাবে তৈরি হল? গানটি যিনি লিখেছেন, তিনি অবশ্য শুধুমাত্র সময়ের দাবি বলে ক্ষান্ত থাকতে চান না। তাঁর কথায়, 'গানটা লেখাল কে? গান লেখাল একটি অনুষ্ঠানের দর্শক-শ্রোতা। সেই অনুষ্ঠানের নাম 'রূপম ইসলাম একক'। আমি বরাবর বলে এসেছি যে, ব্যক্তিগত যোগাযোগ না থাকলে, আমার জীবনে কিছু না ঘটলে আমি গান লিখি না। আমি বিশ্বাসই করি না, আগ বাড়িয়ে আমাকে নানারকম গান লিখে বেড়াতে হবে। নানা মানুষের দুঃখে আমাকে কাঁদতে হবে। অন্যান্যদের জন্য আমাকে গান লিখতে হবে, আমি বিশ্বাস করি না। আমি বিশ্বাস করি, গান লিখব শুধুমাত্র আমার জন্য।' তাছাড়া গানের বার্তাও যে শুধুমাত্র তাঁর নিজের নন, সেই কথাও সাফ জানিয়েছেন রূপম। তিনি বলেন, 'আমি এখানে মানুষের কণ্ঠ হিসেবেই কাজ করেছি। আমার ভাষায় আমি তাদের অনুভূতি, তাদের আবেগ, তাদের আর্তনাদ, সেগুলো আমি অনুবাদ করেছি আমার শিল্পের ভাষায়। এটাকে আমার স্টেটমেন্ট বলব না। এটা আমাদের স্টেটমেন্ট।'

ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে গানটির। পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন শমীক রায়চৌধুরী। গানটি সম্পর্কে তিনি বলেন, 'আমরা যারা শিল্পকর্ম করি, তাদের তো নিজস্ব একটা ভাষা রয়েছে। সেটা আমাদের শিল্পের মাধ্যমে হলেই ভাল। সেই কারণে গানটা প্রথম শুনেই ভেতর থেকে আমি টান অনুভব করি। আমি এই কাজটা করার সিদ্ধান্ত নিই।'

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *