কলকাতা: ফের হু হু করে বাড়তে শুরু করে করোনা সংক্রমণ৷ ভারতে দৈনিক করোনা সংক্রমণে প্রতিদিন তৈরি হচ্ছে নতুন রেকর্ড৷ গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সংক্রমিত ১ লক্ষ ৩১ হাজার ৯৬৮ জন৷ গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৭৮০ জনের৷ সচেতনতা বাড়াতে নাইট কারফিউর নাম বদলে করোনা কারফিউ রাখার সুপারিশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী৷ মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে এমনই সুপারিশ করেছেন নরেন্দ্র মোদী৷ শেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই রাজ্যের নতুন করে ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন ২৭৮৩ জন, মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় ভাইরাস থেকে মুক্তি পেয়েছেন ৯৫৭ জন। যদিও দিনপ্রতি সংক্রমণ নতুন করে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে রাজ্যবাসীর। পশ্চিমবঙ্গের সব থেকে খারাপ অবস্থায় রয়েছে কলকাতা। সেখানে একদিনে সংক্রামিতর সংখ্যা ৪৩০ জন! যদিও সুস্থতার হার এখনো ৯০ শতাংশের ওপর। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে এবার নির্দেশিকা জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট৷
করোনা সংক্রমণ রুখতে কলকাতা হাইকোর্ট নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে৷ কোনও আইনজীবীর জ্বর, কাশির মতো উপসর্গ থাকলে তিনি আদালতে সশরীরে হাজির হয়ে সওয়াল করতে পারবেন না বলে রেজিস্টার জেনারেল প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের জারি করা এক নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে৷ হলফনামায় সই করার কাজ না থাকলে বা বিচারপতি তলব না করলে মামলাকারীরাও আগামী সোমবার থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত আদালত চত্বরে প্রবেশ করতে পারবেন না বলে জানানো হয়েছে৷ এদিকে রাজ্য সরকার সমস্ত সরকারি ও আধা সরকারি দফতরে কর্মীদের হাজিরা কমিয়ে পঞ্চাশ শতাংশ করেছে৷
রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, এই মুহূর্তে রাজ্যে মোট করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ৬,০২,৮০৭ জন, তাদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫,৭৬,৩২৮ জন। মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১০,৩৭০ জন। এদিকে রাজ্যে এই মুহূর্তে অ্যাক্টিভ করোনাভাইরাস রোগীর সংখ্যা ১৬,১০৯ জন। কলকাতার পর সবচেয়ে খারাপ অবস্থা উত্তর ২৪ পরগনার, সেখানে একদিনের সংক্রামিত হয়েছেন ৪০০ জন। তার পরেই রয়েছে হাওড়া (১২৭), দক্ষিণ ২৪ পরগনা (১০৬), পশ্চিম বর্ধমান (১০১), হুগলি (৯১)। এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ লক্ষ ২৬ হাজার ৭৮৯ জন৷ পাশাপাশি বাড়ল একদিনে মৃত্যুর সংখ্যাও৷ গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৬৮৫ জনের৷ এর আগে একদিনে করোনায় মৃতের সংখ্যা ছিল ৬৩০৷
এখনও পর্যন্ত দেশে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১ কোটি ২৯ লক্ষ মানুষ৷ ব্রাজিল ও আমেরিকার পর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে ভারত৷ ভারতে রাজ্যগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ দেখা দিয়েছে মহারাষ্ট্রে৷ মহারাষ্ট্রের পাশাপাশি পঞ্জাবেও বাড়তে শুরু করেছে আক্রান্তের সংখ্যা৷ জারি করা হয়েছে নাইট কারফিউ৷ এরই মধ্যে গতকাল ডোজ না মেলায় মহারাষ্ট্রে থমকে যায় টিকাকরণ কর্মসূচি৷ সাতারা এবং পানভেল জেলায় বন্ধ রয়েছে টেস্টিং৷ টিকার যোগান না থাকায় পুণেতে ১০০-র উপরে ভ্যাকসিন সেন্টার বন্ধ রয়েছে৷ পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে সরকারি দফতরে হাজিরা কমিয়ে ৫০ শতাংশ করার কথা ঘোষণা করেছে নবান্ন৷