কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যসভা নির্বাচনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছেন। তাঁরা হলেন, মৌসম বেনজির নূর, অর্পিতা ঘোষ, দীনেশ ত্রিবেদী এবং সুব্রত বক্সী। এই তালিকা শুনে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের রসাল মন্তব্য, হেরো'দের আবার সংসদে যাওয়ার রাস্তা করে দিতে চাইছেন মমতা।মানুষ যাদের বিপুল ভোটে হারিয়ে দিয়েছেন, তারা আবার সংসদে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।
এই ঘটনার রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিত অবশ্যই রয়েছে। বালুরঘাট থেকে অর্পিতা, ব্যারাকপুর ঠিক দীনেশ এবং মালদা উত্তর থেকে মৌসম বেনজির নূর পরাজিত হয়েছেন। কিন্তু, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাক্তিগত জেদের কারণেও তাঁরা ওই আসনে তৃণমূলের টিকেট পেয়েছেন।
মৌসম কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে এসেছিলেন লোকসভার টিকিট কনফার্ম করবেন বলে। কারণ, তাঁর মনে হয়েছিল, বাম-কংগ্রেস জোটে মালদা উত্তরে তাঁকে ভুগতে হতে পারে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে টিকিট দেন। কিন্তু, ধর্মীয় মেরুকরণের ওই লোকসভায় মালদা উত্তর থেকে জিততে ব্যর্থ হয় মৌসম। অন্যদিকে, অর্জুন সিংয়ের দাবিকে গুরুত্ব না দিয়ে দীনেশ ত্রিবেদিকে ব্যারাকপুর প্রার্থী করেছিল মমতা। কিন্তু, দীনেশ হেরে যায়। আবার , প্রচলিত জনমতের বিরুদ্ধে গিয়ে বালুরঘাট অর্পিতা ঘোষকেই আবার প্রার্থী করেন মমতা। কিন্তু, জনতা বা পার্টির একাংশ অর্পিতার উপর খুশি ছিলেন না। হেরে যান অর্পিতা।
মমতা এই প্রার্থীদের জিতিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। রাজ্য সভার মাধ্যমে কথা রাখার চেষ্টা করবেন তিনি। কিন্তু, এই প্রার্থীদের ফের সুযোগ দিয়ে বেশ করেক ধাপ পিছিয়ে গিয়েছেন কি মমতা? প্রশ্ন উঠেছে। একদিকে প্রশান্ত কিশোর চারিদিকে নতুন মুখ খুঁজে বেড়াচ্ছেন। অন্যদিকে পুরানো মুখেই আস্থা রাখছেন মমতা। অনেকেই হয়তো বলবেন, রাজ্য সভা সকলের জন্য নয়। সেক্ষেত্রে, তৃণমূল কেন ভাল বক্তা উঠিয়ে আনতে পারে নি, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। সেটা তাদের ব্যর্থতা হিসাবেই থেকে যাবে। সিপিএইএমের মত ক্ষয়িষ্ণু রাজনৈতিক দল পরবর্তী প্রজন্ম তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু, ক্ষমতাও থাকা তৃণমূলের কাছে তা প্রার্থিত নয়।
লোকসভায় মহুয়া মৈত্র'র মত একজন অনুসন্ধিৎসু বক্তাকে পাঠিয়ে সারা দেশেই চমক দিয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু, রাজ্যসভায় কেন মমতা সেই সাহস দেখতে পারল না, প্রশ্ন উঠছে। সুব্রত বক্সীকে নিয়ে কারো বিশেষ কিছুই বলার নেই। কারণ তিনি লোকসভায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাননি। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে আবার রাজ্যসভায় পাঠাতে চান মমতা। তাতে দলের কাজের সুবিধা হবে।