কলকাতা: এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তান্ডব চালানোর পর ২০২১-এর শুরুতে অবশেষে হাতে এসেছে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন। কিন্তু এক আতঙ্ক কাটতে না কাটতে এসে গেছে অন্য এক আতঙ্ক। বছরের শুরু থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক প্রজাতির পাখির মধ্যে দেখা দিয়েছে বার্ড ফ্লু সংক্রমণ। শয়ে শয়ে পাখির মৃতদেহে ছেয়ে গেছে দেশের বিভিন্ন রাজ্য।
পাখিদের বার্ড ফ্লুর আতঙ্ক ছড়াতেই তার কোপ পড়েছে হাস-মুরগি তথা পোলট্রি ব্যবসার উপর। এমনিতেই অতিমারী প্রকোপে জেরবার সাধারণ মানুষ। তার উপর মুরগির মাংস বা ডিম খেয়ে বিপদে পড়তে চান না কেউই। কিন্তু মাংসের মতো উপাদেয় খাবার ছাড়া কি থাকা যায়? ফলে অনিবার্য ভাবেই চাহিদা বেড়েছে মটনের।
পশ্চিমের বিভিন্ন রাজ্যে বার্ড ফ্লুর দৌরাত্ম্য দেখা গেলেও এ রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ব্যাপক হারে সংক্রমণের খবর আসে নি। তবে সাবধানের মার নেই। তাই যথারীতি চিকেনের চাহিদা কমে গেছে অনেকটাই। আর চড়চড় করে দাম বেড়েছে মটনের। সূত্রের খবর, গত কয়েকদিনের কলকাতায় পাঁঠার মাংসের চাহিদা স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে গেছে ৩০%। এদিন বেহালা, যাদবপুর, ভবানীপুর, শোভাবাজারের মতো জায়গায় প্রতি কেজি পাঁঠার মাংসের দাম ছিল ৬৮০ থেকে ৭২০ টাকার কাছাকাছি। কোনো কোনো জায়গায় অবশ্য এখনও ৬৫০ টাকা কেজিতেই আছে দাম।
ডিসেম্বর মাস, এমনকি জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেও মটনের দাম কলকাতার বাজারে ছিল ৬২০ টাকা প্রতি কেজি। কিন্তু জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই ক্রমশ বাড়তে শুরু করে এই দাম। বেহালার এক জনৈক মাংসের দোকানের মালিকের কথায়, “মটনের দাম আচমকা বেড়ে গিয়ে এখন ৭০০ থেকে ৭২০ টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে। চাহিদা যদি আরো বাড়ে, দামও বাড়বে।”
এদিকে চাহিদার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে কমে গেছে মুরগির মাংসের দামও। যদিও শহরের সব মাংস বিক্রেতা পাঁঠার মাংসের দাম বাড়িয়ে দেন নি। “পাঁঠার মাংসের জোগানে ঘাটতি না হওয়ায় আমরা দাম একই রেখেছি”, বলেছেন কলেজ স্ট্রিটের বিখ্যাত ‘বাঙালির পাঁঠার দোকানের’ মালিক শক্তি ঘোষ। এক সাধারণ ক্রেতার কথায়, “আমি বাড়ির লোকের জন্য পাঁঠার মাংসই কিনছি। আমি জানি বাংলায় এখনও পর্যন্ত একটাও বার্ড ফ্লু-এর ঘটনা সামনে আসে নি। কিন্তু দেশ জুড়ে যেভাবে পাখি মারা যাচ্ছে তাতে ভয় লাগছে।”