সম্প্রীতির নজির! হিন্দু বৃদ্ধের শেষকৃত্যের জন্য এগিয়ে এলেন মুসলিম প্রতিবেশীরা

একেবারে হিন্দু ধর্মের রীতি মেনেই সম্পন্ন হল শেষকৃত্য।

চুরুলিয়া: কবি কাজী নজরুল ইসলামের গ্রাম চুরুলিয়া। তিনি লিখেছিলেন, ‘একই বৃন্তে দুটি কুসুম, হিন্দু-মুসলমান’। এই বাক্য যেন অক্ষরে অক্ষরে পালিত হল তাঁর নিজের গ্রামেই। হিন্দু বৃদ্ধের শেষকৃত্যের জন্য এগিয়ে এলেন ওই গ্রামের সংখ্যালঘু প্রতিবেশীরা। একেবারে হিন্দু ধর্মের রীতি মেনেই সম্পন্ন হল শেষকৃত্য। সম্প্রীতির নজির দেখল গোটা বাংলা, গোটা দেশ।

এই মুহূর্তে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এমন জায়গায় রয়েছে, যেখানে সম্প্রীতি খুঁজে পাওয়া খুব দুষ্কর। তাই চুরুলিয়া গ্রামের এই ঘটনা অবশ্যই নজর কাড়ে। ওই এলাকার এক বাসিন্দা রামধনু রজকের মৃত্যুর পর তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করার উপযুক্ত ব্যক্তি কেউ ছিলেন না। পরিবারের তরফে ছিল না কেউ। এই পরিস্থিতিতে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে উদ্যোগ নেন ওই গ্রামের সংখ্যালঘু প্রতিবেশীরা। অজয় নদীর ধারে হিন্দু রীতিতে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় রামধনুর। তার কয়েকজন প্রতিবেশীর কথায়, রামধনু খুব সরল মনের মানুষ ছিলেন। সকলের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতেন। তাই আজ এই দুর্দিনে তার পাশে থাকাটা ভাগ্যের ব্যাপার।

সবচেয়ে অবাক হবার মত বিষয় হল, এই গ্রামের নাম ‘দেশের মহান’। এই গ্রামে ২৩০ টি পরিবারের বাস, বেশির ভাগ মুসলিম। অর্থাৎ মুসলিম অধ্যুষিত গ্রামে রামধনুর পরিবারই ছিল একমাত্র হিন্দু পরিবার। বার্ধক্যজনিত কারণে বেশ কিছুদিন ধরে ভুগছিলেন তিনি। কিছুদিন আগে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান। কিন্তু তার বাড়ির লোকের তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না। তাই গ্রামের মুসলিম পরিবারের সকলে একসঙ্গে তার চিকিৎসার ভার নিয়েছিলেন। অবশেষে তাকে বাঁচানো গেল না ঠিকই, কিন্তু তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা সংখ্যালঘু প্রতিবেশীরা দেখাল তা সত্যিই নজিরবিহীন। একেবারে নিজেদের কাঁধে রামধনুর মরদেহ নিয়ে অজয় নদীর ধারে যান সকলে। সেখানে সম্পূর্ণ হিন্দু ধর্মের রীতি মেনে তার সৎকার করা হয়। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *