ঝড়ের গতিতে গীতার ৫০০ শ্লোক শুনিয়ে দেয় ১২ বছরের মুশারিফ

ঝড়ের গতিতে গীতার ৫০০ শ্লোক শুনিয়ে দেয় ১২ বছরের মুশারিফ

ছিন্দবাড়া: মন থেকে চাইলে যে কোনও কাজই অসম্ভবের পর্যায়ে পড়ে না তা আরও একবার প্রমাণ করে দিল উত্তরপ্রদেশের ১২ বছরের ‘বিস্ময় কন্যা’ মুশারিফ৷ উত্তরপ্রদেশের ছিন্দবাড়া এলাকার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী মুশারিফ খান এই অল্প বয়সেই গীতার ৫০০ টি শ্লোক অনায়াসে গড়গড় করে বলতে পারে। শুধুমাত্র গীতার সংস্কৃত শ্লোকই নয়, তার মর্মার্থ এবং ব্যাখ্যাও বেশ দক্ষতার সঙ্গে ঠোঁটস্থ করে ফেলেছে এই বালিকা৷ কিন্তু ইসলাম ধর্মাবলম্বী এই মেয়ের

হঠাৎ গীতার প্রতি আকর্ষণ কেন? এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘ ৬ বছর যাবৎ মেমোরি রিটেনশন কোর্স অর্থাৎ স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করার প্রক্রিয়ায় পাঠরতা রয়েছে এই বিস্ময় বালিকা। আর অ্যাবাকাসের এই কোর্সের অনুশীলনের জন্য বেছে নিয়েছে গীতার ৭০১ শ্লোককেই৷ যদিও তার অভ্যাসের এই তালিকায় প্রথম বিকল্প হিসেবে ছিল সম্পুর্ন ডিকশনারি৷ দ্বিতীয় বিকল্প হিসেবে ছিল স্পম্পূর্ণ ভারতীয় সংবিধান৷ এমনটাই জানিয়েছেন মুশারিফের গণিত শিক্ষিকা রোহিনী৷ গণিত শিক্ষিকা আরও বলেন, “ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই মুশারিফ গীতা পঠন ও অধ্যয়ন শুরু করে। তার মতো অনেকেই অনুশীলনের বিকল্প হিসেবে গীতা বেছে নিলেও এই প্রথম এত দ্রুত গীতার ৫০০ শ্লোক আয়ত্ত করতে সক্ষম হল মুশারিফ। পাশাপাশি ইসলাম ধর্মের হলেও কোনও ছুৎমার্গ না রেখে তার গীতাকে বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্তকে আমি নমন করি৷”

এই প্রসঙ্গে মুশারিফ বলে, “এই কোর্সের পরেও আমি কিছু করতে চেয়েছিলাম, তাই আমি গীতাকে বিকল্প হিসেবে বেছে নিয়েছিলাম৷” পাশাপাশি ধর্মীয় ভিন্নতা প্রসঙ্গে আরও বলেন, “আমার মা বলে বাড়ির বাইরে আমি শুধুমাত্র একজন মানুষ৷ তিনিই আমাকে গীতা পঠনের অনুমতি দেন৷ আর আমি সব ধর্মের বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে চাই৷” মেয়ের এহেন সাফল্যে খুশি মুশারিফের মা ও বাবা দুজনেই৷ মেয়ের সাফল্য প্রসঙ্গে মুশারিফের মা জিনাত বলেন, “আমি ছোট থেকেই মেয়েকে একজন ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছি৷ শুধুমাত্র গীতা নয়, কোরআনের আয়াতও মুসারিফের মুখস্থ রয়েছে৷” এর পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “সব ধর্মই একই জ্ঞান দেয়। সবার উপরে মানুষ সত্য৷” যেখানে সারা দেশে একটা ধর্মীয় বিভেদের পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে দিনের পর দিন, সেখানে মুসারিফের এই বিস্ময়কর কার্য দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়াতে পারে দেশবাসীর কাছে, এমনটাই আশা রাখেন মুসারিফের মা-বাবা৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *