বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যেও কাটছাট তাহলে। এবার দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের একটি পাঠ্যসূচি থেকে বাদ দেওয়া হল ইকবালকে। আমরা ইকবালকে চিনি তাঁর রচিত সেই বিখ্যাত – সারে জঁহা সে আচ্ছা, হিন্দুস্থাঁ হামারা-র স্রষ্টা হিসেবে। সূত্রের খবর, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের একটি বিশেষ অংশ থেকে ইকবালের জীবনি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যকাডেমিক কাউন্সিলের। শুক্রবার সেই মর্মে জারি হয়েছে নির্দেশিকা। জানা যাচ্ছে,
• দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মর্ডান ইন্জিয়ান পলিটিকাল থট’ -এর একটি অধ্যায় ইকবাল নিয়ে
• অধ্যায়টি প্রয়াত কবির জীবনি সম্পর্কিত ইকবাল: কমিউনিটি বিষয়টিকে বাদ দেওয়া হচ্ছে
কেন্দ্রীয় সরকার পরিচালিত দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্ত কতটা যুক্তিযুক্ত, সেই প্রশ্নের থেকেও বড় কথা, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ইকবালের যে পর্বটি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেই অধ্যায়টিকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে রাখার নেপথ্যেও নিশ্চয়ই কোনও কারণ ছিল। হঠাত্ এই ধরণের সিদ্ধান্তে কি বিষয়ভিত্তিক পরিকাঠামো বিঘ্নিত হচ্ছে না? শুধু কেন ইকবালের উপর কোপ। ইকবালের উপর কোপ পড়লেও পাঠ্যসূচিতে থাকছেন রামমোহন,পন্ডিত রমাবাই, স্বামী বিবেকানন্দ থেকে মহাত্মা গান্ধী। তাহলে কেন ইকবাল বাদ। উর্দু কবি বলেই কি?
প্রশ্ন উঠছে কারণ, যোগীর উত্তরপ্রদেশেও তো ইকবাল রচিত গান প্রার্থনায় গাওয়ার কারণে সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হয়েছিল।দেশের স্কুলের পাঠ্যসূচি থেকেও বাদ পড়ে যায় মুঘল যুগ। অথচ ইতিহাস ভোলে না ইকবালের অবদান।ঠিক কতটা সমাদৃত ইকবাল সেই দিকেও আলোকপাত করা যাক-
• ভারত-পাকিস্তানে সমান ভাবে সমাদৃত ইকবাল
• পাকিস্তান তাঁকে জাতীয় কবির মর্যাদা দিয়েছে
• রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর সমকালীন কবি ইকবালের কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদ পড়ে প্রশংসা করেন
• মহাত্মা গান্ধীর প্রশংসাও কুড়িয়েছিল ইকবালের লেখা
• পণ্ডিত রবিশঙ্কর ভারতীয় সেনার জন্য তৈরি করেছিলেন সারে জঁহা সে আচ্ছা -র কুচকাওয়াজ সংস্করনের সুর
সেই ইকবালকে ব্রাত্য করা হলো। চলতি শিক্ষাবর্ষে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক নিয়ন্ত্রিত সিবিএসইর দ্বাদশ শ্রেনীর ইতিহাস পঠ্যক্রম থেকে মুঘল যুগকে বাদ দেওয়া হল। তাই প্রশ্ন, মেরুকরণ না কি শাসকের ক্ষমতার তাস। প্রশ্ন একটাই, কেন শিক্ষার উপরই কোপ।