মুম্বই: ১৯৮৩-পর ২০১১৷ দীর্ঘ ২৮ বছরের ব্যবধানে এই দিনে ওয়াংখেড়ের বুকে তেরঙা উড়িয়ে ক্রিকেট বিশ্বকাপ ঘরে তুলেছিল ভারত৷ তার পর কেটে গিয়েছে দশ-দশটা বছর৷ তবু এতটুকু কমেনি আনন্দ৷ একদশক পুরনো সেই স্মৃতির দিকে ফিরে তাকালে আজও নস্টালজিক হয়ে পড়েন সেদিনের কুশীলবরা৷ তবে সব ছাপিয়ে আলোচনার মধ্যমণি যেন বিশ্বকাপ ফাইনালের রাতে ওয়াংখেড়ের গ্যালারিতে আছড়ে পড়া একটা ছয়৷ শ্রীলঙ্কার নুয়ান কুলাশেখরাকে লং অনের ওপর দিয়ে উড়িয়ে দিয়েই তো আরব সাগরের পারে উচ্ছ্বাসের ঢেউ তুলেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি৷ সেই ছক্কায় আজও মজে বিশ্বকাপের ম্যান অফ দ্য টুর্নামেন্ট যুবরাজ সিং। ধোনির সেই ছয় এখনও ভুলতে পারেননি তিনি। আবার উলটো দিকে, ফাইনালের আর এক নায়ক গৌতম গম্ভীর মনে করেন, ‘একটা ছয় আমাদের বিশ্বকাপ জেতায়নি।’
২০১১-র বিশ্বকাপে ৯ ম্যাচে ৩৬২ রান করাই শুধু নয়, ১৫ উইকেট নিয়ে প্রতিযোগিতার সেরা হয়েছিলেন যুবরাজ। তত দিনে তাঁর শরীরে নিঃশব্দে বাসা বেঁধেছে ক্যানসার। মৃত্যুঞ্জয়ী বাঁ-হাতি অলরাউন্ডার এদিন অবশ্য বিশ্বকাপের জার্সি পরে টুইটারে ভিডিও বার্তা দিতে গিয়ে তুলে ধরলেন সতীর্থদের তাগিদ-অবদানের কথাই। দলগত পারফরম্যান্সের উল্লেখ করতে গিয়েই বিশেষ ভাবে বললেন মাহির কথা। জেতাটাই বড় কথা নয়, কী ভাবে জয় এল, সেটাও দেশের হয়ে দুটো বিশ্বকাপ জয়ে অবদান রাখতে পেরে ধন্য হয়ে যাওয়া যুবির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বল গ্যালারিতে ফেলে জেতার যে আলাদা মজা, সেটার জন্যই ধোনির ছক্কার কথা ভোলা যাবে না, মন্তব্য যুবরাজের।
ধোনির সেই ছক্কার প্রশ্নে গম্ভীর অবশ্য চিরকালই উলটো মেরুর বাসিন্দা। গত বছরও এক ওয়েবসাইটকে তিনি তুলোধোনা করেছিলেন যে, ধোনির এক ছক্কাই যেন বিশ্বকাপ জিতিয়ে দিয়েছে। সেদিন ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৯৭ রান করে জয়ের রাস্তা গড়ে দেওয়া গম্ভীর বিশ্বজয়ের দশকপূর্তিতেও মনে করছেন, এই সাফল্যে প্রধান ভূমিকা নেওয়া যুবরাজের পাশাপাশি আরও অনেক হিরো রয়েছেন। এখনও তাঁর বক্তব্য, একা কেউ বিশ্বকাপ জেতাতে পারে না, অবদান সবার। তাঁর প্রশ্ন, ‘তা হলে কেন আমরা একটা ছয়কেই মনে রাখব? একটা ছয় যদি বিশ্বকাপ জেতাতে পারত, তা হলে তো যুবরাজ ভারতের হয়ে ছ’টা বিশ্বকাপ জিতত?’ ধোনির সঙ্গে যাঁর শীতল সম্পর্কের কথা সুবিদিত, সেই গম্ভীরের অনুতাপ, ওই বিশ্বকাপের অনেক নেপথ্য নায়ক থাকলেও, মানুষ শুধু কথা বলে একটা ছক্কা নিয়েই।