কলকাতা: আর কয়েক সপ্তাহ পরেই বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে দলবদলের আবহে বেশ খানিকটা ব্যাকফুটে চলে গিয়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ একে একে অনেক তাবড় নেতা এবং মন্ত্রী চলে গিয়েছে বিজেপিতে। এখনো ধোঁয়াশা রয়েছে কয়েকজনকে নিয়ে। এবার তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ শতাব্দী রায়কে নিয়ে জল্পনা তীব্র হল। ‘শতাব্দী রায় ফ্যান্স ক্লাব’-এর পোস্ট ঘিরে বিস্তর জল্পনা সৃষ্টি হয়েছে। তাহলে কি তৃণমূল কংগ্রেসে অসন্তুষ্ট শতাব্দী? এবার জবাব দিলেন অভিনেত্রী সাংসদ৷
শুক্রবার সংবাদমাধ্যমকে শতাব্দী রায় জানিয়েছেন, ‘আজই দিল্লি যাচ্ছি৷’ অমিত শাহের সঙ্গে দেখা হতে পারে? সরাসরি জাবব এড়িয়ে দিয়েছেন ইঙ্গিত৷ দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে শতাব্দী বলেন, ‘সাংসদ হওয়ার আমি এলাকার কাটিয়েছি৷ কিন্তু গত ২ বছর আমাকে মানুষের কাছে যেতে দেওয়া হয়নি৷ আমি কাদের জন্য যেতে পারছি না, তার জবাব দেওয়া আমার দায়িত্ব৷ অনেকে আমাকে প্রশ্ন করছে, অপনি রাজনীতি ছেড়ে দিলাম কি না৷’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘আমি ২ বার তারাপীঠ উন্নয়ন পর্যদ থেকে পদত্যাগ করতে চেয়েছি৷ চিঠি পাঠিয়েছি৷ কিন্তু তা গৃহীত হয়নি৷ কারম, সেখানে আমার সিদ্ধান্তের কোনও গুরুত্ব নেই৷ যেখানে আমার সিদ্ধান্তের কোনও গুরুত্ব নেই, সেখানে থাকা যায় না৷’’
দলকে ক্ষোভের কারণ জানিয়েছিলেন? জবাবে অভিনেত্রী সাংসদ জানান, ‘‘দলনেত্রীকে ক্ষোভের কথা জানাইনি৷ কারণ, অনেক সময় তা জানানো যায় না৷ জানিয়েও লাভ নেই৷ অনেক সময় মনে হয় কাকে জানাব৷’’ এরপর তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে শতাব্দী দিল্লি যাচ্ছেন বলে জানান৷ বলেন, ‘‘আমি আজ দিল্লি যাচ্ছি৷ ওখানে অনেক বন্ধু-আত্মীয়-পরিজন আছেন৷ তাঁদের সঙ্গে দেখা হবে৷ আমি তিন বারের সাংসদ৷ দিল্লি যেতে হয়৷ ওটাই আমার ঘরবাড়ি৷’’ বিজেপিতে যোগদানের জল্পনায় শতাব্দী রায় বলেন, ‘‘বিজেপিতে যোগদান করব, এমনটা কখনও বলিনি৷ আমি ভোটারদের কাছে দায়বদ্ধ৷’’
বৃহস্পতিবার ফেসবুকে ‘শতাব্দী রায় ফ্যান্স ক্লাব’ পেজের তরফে পোস্ট করা হয়েছে, “২০২১ খুব ভালো কাটুক। সুস্থ থাকুন, সাবধানে থাকুন। এলাকার সঙ্গে আমার নিয়মিত নিবিড় যোগাযোগ। কিন্তু ইদানিং অনেকে আমাকে প্রশ্ন করছেন কেন আমাকে বহু কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে না। আমি তাঁদের বলছি যে আমি সর্বত্র যেতে চাই। আপনাদের সঙ্গে থাকতে আমার ভালো লাগে। কিন্তু মনে হয় কেউ কেউ চায় না আমি আপনাদের কাছে যাই। বহু কর্মসূচির খবর আমাকে দেওয়া হয় না। না জানলে আমি যাব কী করে? এ নিয়ে আমারও মানসিক কষ্ট হয়। গত দশ বছরে আমি আমার বাড়ির থেকে বেশি সময় আপনাদের কাছে বা আপনাদের প্রতিনিধিত্ব করতে কাটিয়েছি, আপ্রাণ চেষ্টা করেছি কাজ করার, এটা শত্রুরাও স্বীকার করে। তাই এই নতুন বছরে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করছি যাতে আপনাদের সঙ্গে পুরোপুরি থাকতে পারি। আপনাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। ২০০৯ সাল থেকে আপনারা আমাকে সমর্থন করে লোকসভায় পাঠিয়েছেন। আশা করি ভবিষ্যতেও আপনাদের ভালোবাসা পাব। সাংসদ অনেক পরে, তার অনেক আগে থেকেই শুধু শতাব্দী রায় হিসেবেই বাংলার মানুষ আমাকে ভালোবেসে এসেছেন। আমিও আমার কর্তব্য পালনের চেষ্টা করে যাব। যদি কোনো সিদ্ধান্ত নিই আগামী ১৬ জানুয়ারি ২০২১, শনিবার দুপুর দুটোয় জানাব৷” -ফাইল ছবি৷