খোঁজ নেই স্বামীর! সদ্যোজাত সন্তানকে লালনপালনে অক্ষম, সই করে ‘দান’ করে দিলেন মা

খোঁজ নেই স্বামীর! সদ্যোজাত সন্তানকে লালনপালনে অক্ষম, সই করে ‘দান’ করে দিলেন মা

চুঁচুড়া: ন’মাস গর্ভে ধারণ করার পর সন্তানের মুখ দেখেছিলেন তিনি৷ একরত্তি ছেলেটাকে বুকে জড়িয়ে ধরেছিলেন মা৷ কিন্তু, সন্তান মানুষ করতে তিনি যে অপাগর৷ স্বামী নিখোঁজ৷ নিজে ইট ভাটায় দিনরাত কাজ করে কোনও মতে দিন কাটান৷ গত ২২ সেপ্টেম্বর চুঁচুড়া জেলা হাসপাতালে পুত্রসন্তান প্রসব করার এক সপ্তাহ পর হাসপাতাল থেকে ছুটি পান ওই মহিলা। হাসপাতাল থেকে বেরিয়েই নিজের সদ্যোজাতকে অন্যের হাতে তুলে দিলেন সেই মা। রীতিমতো কোর্ট পেপারে সই করে এক নিঃসন্তান দম্পতির হাতে সদ্যোজাত ছেলেকে তুলে দেন তিনি। যদিও তাঁদের মধ্যে কোনও আর্থিক লেনদেন হয়নি বলেই দাবি৷ বরং সন্তানকে হাতে পেয়ে নতুন জীবন খুঁজে পেয়েছেন চুঁচুড়া থানার চ্যাটার্জি বাগান এলাকার বাসিন্দা ওই নিঃসন্তান দম্পতি৷

পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২২ সেপ্টেম্বর চুঁচুড়া জেলা হাসপাতালে পুত্রসন্তানের জন্ম দেন ইটভাটার এক মহিলা শ্রমিক। সুগন্ধা অঞ্চলে একটি ইটভাটায় কাজ করেন তিনি৷ ২৭ সেপ্টেম্বর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেই দুধের শিশুকে তিনি দান করে দেন যাদব মণ্ডল ও তাঁর স্ত্রী বুলু মণ্ডলকে৷ 

জানা গিয়েছএ, ওই মহিলার সই করা ১০০ টাকার কোর্ট পেপারে লেখা রয়েছে, ‘‘সন্তান মানুষ করার মতো আর্থিক সামর্থ নেই। শিশুর ভরণপোষণের দায়িত্ব নিতে অপারগ। তাই লিখিত ভাবে সন্তানকে হস্তান্তর করছি।’’ শিশুটির বয়স মাত্র ৮ দিন। মায়ের কোল ছেড়ে শেষ তিন দিন তার ঠিকানা চ্যাটার্জি বাগানের মণ্ডল পরিবার৷ মণ্ডল দম্পতির দাবি, আইন মেনেই তাঁরা শিশুটিকে দত্তক নিয়েছেন। যাদব বলেন, ‘‘কোর্ট পেপারে সই করা আছে। লিখিত ভাবে আমরা ওই শিশুকে গ্রহণ করেছি। তাই এই হস্তান্তর বৈধ।’’ 

এদিকে, শনিবার এই খবর জানতে পেরেই মণ্ডল বাড়িতে পৌঁছান কোদালিয়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দেবাশিস চক্রবর্তী। তিনি তাঁদের বলেন, এই ভাবে কোনও শিশুকে দত্তক নেওয়া যায় না৷ এর জন্য বেশ কিছু সরকারি নিয়মকানুন রয়েছে। যাদবকে মহকুমাশাসকের সঙ্গে যোগাযোগও করতে বলেছেন তিনি। এদিকে, সন্তানকে কোলে পেয়ে নতুন জীবন পেয়েছে স্ত্রী৷ তাঁর মুখের হাসি হারাতে দিতে নারাজ যাদব৷ 
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *