corruption
নিজস্ব প্রতিনিধি: সদ্য রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্য। দুর্নীতির অভিযোগ আসা কবে যে পুরোপুরি বন্ধ হবে সে প্রশ্নের উত্তর কারও যেন জানা নেই। এ যেন নিয়ম করে শাসক দলের নেতাদের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চলছে। কখনও কেউ গ্রেফতার হচ্ছেন, কখনও আবার তাঁরা সিবিআই বা ইডির স্ক্যানারে থেকে যাচ্ছেন। কিন্তু অদ্ভুতভাবে দেখা যাচ্ছে এখনও পর্যন্ত যে বা যারা এই সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন, তাঁদের বড় অংশই কলকাতা বা তার লাগোয়া জেলার। তাঁদের কার্যকলাপ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কলকাতা কেন্দ্রিক। মুর্শিদাবাদ জেলার বড়ঞা কেন্দ্রের বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা গ্রেফতার হয়েছেন। সেটা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসে অনুব্রতর মতো একজন নেতাই রয়েছেন, যার পরিচয় বীরভূম জেলাভিত্তিক নয়। তিনি সব সময় কলকাতা তথা রাজ্য রাজনীতিতে খবরের শিরোনামে থেকে গিয়েছেন। এর বাইরে যে বা যারা গ্রেফতার হয়েছেন, বা যারা সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন, তাঁদের বেশিরভাগটাই কলকাতা বা লাগোয়া জেলা কেন্দ্রিক।
রাজ্য প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র কলকাতা। তবে কি সেই সূত্রে প্রশাসনের একশ্রেণির কর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে এই দুর্নীতি চালাতে তাঁদের সুবিধা হয়েছে? কারণ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় দেখা গিয়েছে একাধিক শীর্ষ শিক্ষাকর্তা গ্রেফতার হয়েছেন। সন্দেহের তালিকায় আরও অনেকে রয়েছেন। তবে মনে রাখতে হবে রাজ্য প্রশাসনের বেশিরভাগটাই স্বচ্ছ ভাবে কাজ করছে। নীচুতলা থেকে উপরমহল পর্যন্ত অধিকাংশ কর্মী নিরলস ভাবে সততার সঙ্গে কাজ করে চলেছেন বলেই রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। পুরো সিস্টেমটা তাঁদের জন্যই মসৃণ ভাবে চলছে। কিন্তু সব জায়গাতেই কিছু কিছু মানুষ থাকেন যারা দুর্নীতির সঙ্গে হাত মিলিয়ে নিতে বোধহয় দু’বার ভাবেন না। আর সেই জন্যেই কি সাম্প্রতিককালে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ উঠে এসেছে কলকাতা ও তার লাগোয়া জেলায় বসবাস করা বা রাজনীতি করা ব্যক্তিদের থেকে? এই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠছে।
একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে কলকাতা থেকে অনেক দূরে থাকা উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির পাশাপাশি বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম প্রভৃতি জেলাগুলি থেকে শাসক বা বিরোধী দলের কাউকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে, বা তাঁরা সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন, এমনটা চট করে মনে পড়বে না। তবে কি ‘মধুভাণ্ড’টা পুরোপুরি কলকাতা বা লাগোয়া জেলা কেন্দ্রিক, বা বলা ভাল শহর কেন্দ্রিক বলেই এই সমস্ত অঞ্চলের বাতাসে এত দুর্নীতির অভিযোগ ভেসে বেড়াচ্ছে? প্রশ্নটা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।