নিজস্ব প্রতিনিধি: ‘মোদি গ্যারান্টি ২০২৪’ নামে বিজেপি লোকসভা নির্বাচনের ইস্তাহার প্রকাশ করেছে। কিন্তু সেখানে চাকরি বা চাকরির পরিকাঠামো গড়ে তোলার বিষয় নিয়ে তেমন কিছু বলা হয়নি বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। আসলে ধর্মের মোড়ক থেকে কিছুতেই যেন বেরিয়ে আসতে পারছে না বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি-সহ বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের উপস্থিতিতে এই ইস্তাহারের অন্যতম বিষয় অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করা।
বিজেপি ফের কেন্দ্রে ক্ষমতায় এলে দেশ জুড়ে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করা হবে বলে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। উল্লেখ্য এই নীতি চালু হলে মুসলিম-সহ বিভিন্ন ধর্মের ব্যক্তিগত আইন তার গুরুত্ব হবে। যে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। আসলে ধর্মীয় নিরিখেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিজেপি দেশ জুড়ে চালু করতে চায় বলে রাজনৈতিক মহল মনে করে। এর পাশাপাশি ‘এক দেশ এক নির্বাচন’, বিজেপি ফের ক্ষমতায় এলে এই নীতিও কার্যকর করার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে অ-বিজেপি দলগুলি এখন থেকেই ‘এক দেশ এক নির্বাচন’ এই পদ্ধতির বিরোধিতা করছে। তারা মনে করছে এটা হলে লোকসভা নির্বাচনের হাওয়ায় বিধানসভা নির্বাচন, অর্থাৎ রাজ্য ভিত্তিক ইস্যু ধামাচাপা পড়ে যাবে। এর সুবিধা পাবে কেন্দ্রের শাসক দল। সেটা হলে ২০২৬-এ বিধানসভা নির্বাচনে জিতে বাংলায় যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন, তার তিন বছরের মধ্যে লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে আবার বিধানসভা নির্বাচন করতে হবে। বিজেপির এই প্রতিশ্রুতির বিরোধিতা করতে শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল ও বামেরা।
ইস্তাহারে বেশ কিছু প্রকল্পের কথা তুলে ধরেছে বিজেপি। বিনামূল্যে রেশন আরও পাঁচ বছর দেওয়া হবে। জন ঔষধি কেন্দ্রে আশি শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে। আরও তিন কোটি মহিলাকে ‘লাখপতি দিদি’ বানানো হবে। এছাড়া রয়েছে বেশ কিছু জনমোহিনী প্রকল্পের কথা। কিন্তু আগামী পাঁচ বছরে কত সংখ্যক বেকার যুবক-যুবতীকে চাকরি করে দেওয়ার পরিকাঠামো গড়ে তুলতে পারবে যদি বিজেপি ফের ক্ষমতায় আসে, তা নিয়ে সুস্পষ্ট কিছু জানানো হয়নি।
অতীতে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছিলেন প্রতি বছরে ২ কোটি বেকারকে চাকরি দেওয়া হবে। সেই সংখ্যার ধারেকাছেও যে পৌঁছনো যায়নি সেটা আজ সকলেই জানেন। তাই চাকরি দেওয়ার ব্যাপারে কোনও সুনির্দিষ্ট সংখ্যার কথা প্রধানমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়নি। যে বিষয়টি নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য তথা কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে। ঘটনা হল রাম মন্দির নির্মাণ, হিন্দুত্ব ইস্যু, জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বিলোপ-সহ বেশ কিছু বিষয় সামলে রেখে বিজেপি প্রবল ভাবে প্রচার শুরু করেছে। তার মধ্যে অন্যতম হল জাতীয়তাবাদী ইস্যু। কিন্তু বেরোজগারি ইস্যুতে বিজেপি কার্যত চুপ করে রয়েছে। সেটি প্রবলভাবে প্রতিফলিত হয়েছে ইস্তাহারেও। যা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।