ফের হিন্দুত্ব লাইনে মোদি! মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর দিলেন উন্নয়নের বার্তা

ফের হিন্দুত্ব লাইনে মোদি! মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর দিলেন উন্নয়নের বার্তা

60f8e3c970c3939d9684fa6b88eb04f7

নিজস্ব প্রতিনিধি:  লোকসভা নির্বাচনের আগে একদিকে হিন্দুত্বের তাস, অন্যদিকে উন্নয়নের বার্তা। ফের এভাবেই দেখা গেল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় গত ২২ জানুয়ারি রাম মন্দির উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এবার সেই যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যেই একটি মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়ে দিলেন উন্নয়নের বার্তাও। রাজনৈতিক মহল মনে করছে নির্বাচনের আগে হিন্দুত্ব তাসে ভরসা রাখতেই হচ্ছে বিজেপিকে।  সোমবার উত্তরপ্রদেশের সম্ভাল জেলায় বৈদিক আচার অনুষ্ঠান মেনে কল্কিধাম হিন্দু মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মোদি। এরপর প্রধানমন্ত্রী বলেন,”শুধু মন্দির নয়, হাসপাতালও তৈরি করছি আমরা। মানুষের উন্নয়নের জন্য আমাদের প্রচেষ্টা জারি থাকবে”।

সদ্য বহিষ্কৃত কংগ্রেস নেতা আচার্য প্রমোদ কৃষ্ণমের অনুরোধেই এদিন মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে উপস্থিত ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ-সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি। কিছুদিন আগেই শ্রী কল্কিধাম নির্মাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান আচার্য প্রমোদ কৃষ্ণমকে দলবিরোধী মন্তব্যের অভিযোগে ছয় বছরের জন্য বহিষ্কার করে কংগ্রেস। ঘটনা হল আচার্য প্রমোদ কৃষ্ণম দীর্ঘদিন ধরেই হিন্দুত্ববাদী নেতা বলে পরিচিত। আর দলীয় লাইন না মেনেই বিজেপির সুরে সুর মিলিয়ে রাম রাজ্যের দাবিও জানিয়েছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, রাম মন্দির ইস্যুতে প্রকাশ্যে বিজেপিকে সমর্থন করতেও দেখা দিয়েছে তাঁকে। এমনকী দিল্লিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখাও করেছেন তিনি। এরপরই প্রমোদকে দল থেকে বহিষ্কার করে কংগ্রেস। কিন্তু তাতেও দমানো যায়নি তাঁকে। উল্টে বহিষ্কারের পর প্রধানমন্ত্রীর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে প্রমোদ কৃষ্ণম বলেন,”রাম এবং রাষ্ট্র, সেখানে কোনও আপস করব না। আমি নরেন্দ্র মোদিজির সঙ্গেই আছি। আর তিনি আছেন দেশের সঙ্গে।”  প্রধানমন্ত্রী মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পরে বলেন,”আচার্য ও সাধুদের উপস্থিতিতে বিশাল কল্কিধাম মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সৌভাগ্য হয়েছে আমার। আমি মনে করি কল্কিধাম ভারতীয়দের বিশ্বাসের আরেকটি মহান কেন্দ্র হয়ে উঠবে। আমরা মন্দিরের পাশাপাশি মেডিক্যাল কলেজও তৈরি করছি। ঐতিহ্যের পাশাপাশি উন্নয়নের মন্ত্র বহন করছি। বিদেশ থেকেও ফিরিয়ে আনা হচ্ছে প্রাচীন ভাস্কর্য। বিদেশি বিনিয়োগও আসছে রেকর্ড পরিমাণে। যে নতুন যুগ আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছে তাকে আমরা খোলা হৃদয়ে স্বাগত জানাই। আজ ভারতের অমৃত কালে দেশের গৌরব ও শক্তির বীজ অঙ্কুরিত হচ্ছে। দেশ সফল হওয়ার শক্তি পায় সবার একতা থেকে।”

এর পাশাপাশি গত দশ বছরে কেন্দ্রীয় সরকার সাধারণ মানুষের স্বার্থে কী কী প্রকল্প এনেছে তাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। সম্প্রতি আবুধাবি অর্থাৎ বিদেশের মাটিতে গিয়েও প্রধানমন্ত্রী একটি মন্দিরের উদ্বোধন করেছেন মোদি। অর্থাৎ হিন্দুত্বের বার্তা দিয়েই চলেছে গেরুয়া শিবির। লোকসভা নির্বাচনের আগে যা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। যদিও বিজেপির দাবি তারা যে উন্নয়ন করেছে গত দশ বছরে তাতে অনায়াসে টানা তৃতীয়বার বিপুল সংখ্যক আসনে জিতে ফের ক্ষমতায় আসা নিশ্চিত তাদের। তার জন্য মন্দির রাজনীতি করার দরকার নেই বলেই বক্তব্য গেরুয়া শিবিরের। যদিও বাস্তব তথ্য অন্য কথাই বলছে। গেরুয়া শিবিরের নির্বাচনী কৌশল একটাই, একদিকে মন্দির রাজনীতি, অন্যদিকে উন্নয়নের বার্তা দেওয়া। সেই কৌশলেই পরপর সাফল্য আসছে বলে রাজনীতির কারবারির মনে করেন। ফের তেমন ঘটনাই ঘটতে দেখা গেল উত্তরপ্রদেশে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *