নয়াদিল্লি: করোনা আতঙ্কে বিশ্ববাসী যখন দুশ্চিন্তায়, তখন মারণ-ভাইরাস মোকাবিলায় ভারতের সক্রিয়তা বিশেষ প্রশংসার দাবি রাখছে। অন্তত এমনটাই মনে করছেন মুম্বইয়ের সুজয় কদম, যাঁর মেয়ে ইতালিতে পড়াশোনা করতেন। কিন্তু করোনার জেরে আটকে পড়েছিলেন সেই দেশে। ১৫ মার্চ দেশে ফিরেছেন ওই পড়ুয়া। মেয়েকে দেশে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে কেন্দ্র সরকারের সক্রিয়তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ সুজয়। মোদী সরকারকে দ্বিতীয় অভিভাবক বলে সম্বোধন করলেন তিনি।
সুজয় কদমের মেয়ে ৪ ফেব্রুয়ারি স্নাতকোত্তর স্তরে পড়তে গিয়েছিল ইতালির মিলানে। ক্লাস শুরু হয়েছিল ২০ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু করোনা ভাইরাসের জন্য আচমকাই তাঁর কলেজ সাময়িক বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি হয়। এরপর ২৮ ফেব্রুয়ারি ইতালি থেকে তাঁর মেয়ে সব ঠিক আছে বলেই জানিয়েছিলেন সুজয়কে। সেই অনুযায়ী সেখানে থাকার চারমাসের ভাড়াও মিটিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পরের মাসের ১০ তারিখ সুজয়ের মেয়ে জানালেন যে, সেই দেশের দোকানপাট প্রায় সবকিছুই বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। তবে দিন পনেরো চালানোর মতো খাবার সংগ্রহ করে নিয়েছিলেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে সুজয়বাবু তাঁর মেয়েকে তাড়াতাড়ি বাড়ি ছেড়ে দিতে বলেন।
তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনার তোড়জোড় শুরু হয়। কিন্তু ততদিনে ভারতে ফেরার ক্ষেত্রে জটিলতা বাড়ে। ওই পড়ুয়ার বাবা বলেন, '১২ মার্চ সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ আমি ভারতীয় দূতাবাসের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখলাম যে, মিলানের দূতাবাস বন্ধ হয়ে গেছে।' সব রাস্তা যখন বন্ধ, তখন ভারতীয় দূতাবাসের তরফে জানানো হয় যে, ১৪ মার্চ তাঁর মেয়ে দেশে ফিরছেন। অবশেষে ভারত সরকারের সক্রিয়তায় ১৫ মার্চ দেশে ফিরেছেন তাঁর মেয়ে। কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন তিনি। এই অভিজ্ঞতায় মোদী সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করলেন সুজয় কদম। তিনি বলেন, 'আমি বহু বছর ধরে ভারত সরকারকে দোষারোপ করতাম। তবে শেষপর্যন্ত দেখলাম যে আমার মেয়ের আর এক অভিভাবক।' তিনি আরও বলেন, 'এতদিন ভাবতাম, আমিই আমার মেয়ের একমাত্র বাবা। তবে এখন আমি উপলব্ধি করছি যে, নরেন্দ্র মোদী সরকার আমার মেয়ের দ্বিতীয় পিতা-মাতার মতো।'