ঢাকা: লকডাউনের পর এই প্রথম বিদেশ সফরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ শুক্রবার থেকে শুরু হল তাঁর দু’দিনের বাংলাদেশ সফর৷ প্রতিবেশী রাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবসের প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত রয়েছেন তিনি৷ পাশাপাশি আজই পালিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী৷
আরও পড়ুন- মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশ ‘ধর্মনিরপেক্ষতার’ পাঠ পড়াল, সাক্ষী মোদী
এদিন বক্তব্যের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের এই দিনটি আমার জীবনের স্মরণীয় মুহূর্তের মধ্যে অন্যতম৷ শেখ মুজিবর রহমানকে শ্রদ্ধা জানিয়ে তিবি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে গান্ধী শান্তি পুরস্কারের সম্মানিক করতে পেরে আমরা গর্বিত৷ আজ সেই সকল ভাইবোনের কথা স্মরণ করতে চাই যাঁরা নিজের দেশ, নিজের ভাষার জন্য অমানসিক অত্যাচার সহ্য করেছিলেন৷ নিজেদের জীবন বলিদান দিয়েছিলেন৷ সেই সঙ্গে সেই ভারতীয় সেনাদেরও কুর্নিশ জানান তিনি৷ যাঁরা, মুক্তযুদ্ধে নিজেদের রক্ত ঝরিয়ে বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণে বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন৷ প্রসঙ্গত, আজ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া বহু সেনা অফিসার উপস্থিত ছিলেন এই অনুষ্ঠানে৷
বাংলাদেশের যুব সমাজের উদ্দেশে মোদী বলেন, আমার জীবনের প্রথম আন্দোলন ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সামিল হওয়া৷ বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য আমরা সত্যাগ্রহ আন্দোলন করেছিলাম৷ এর জন্য আমাকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল৷ বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য যতটা উদ্বেগ এপারে ছিল, ততটাই উৎকন্ঠা ছিল ওপাড়েও৷ এখানে পাক সেনারা অকথ্য অত্যাচার চালিয়েছিল৷ তবে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব, এটা স্পষ্ট করে দিয়েছিল কোনও শক্তি বাংলাদেশকে গোলাম করে রাখতে পারবে না৷ উনি বলেছিলেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম৷ তাঁর নেতৃক্বে গড়ে উঠেছিল মুক্তি বাহিনী৷ আজ ওঁনার সাহসিকতাকে স্মরণ করার দিন৷ তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে ভারতের প্রতিটি প্রান্ত, প্রতিটি রাজনৈতিক দল সমর্থন জানিয়েছিল৷ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর প্রয়াস ও মহত্বপূর্ণ ভূমিকা সর্বজনবিদিত৷ ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর অটলবিহারী বাজপেয়ীজি বলেছিলেন, আমরা কেবল মুক্তি সংগ্রামে প্রাণ বিসর্জনকারীদের সঙ্গে লড়ছি না, আমরা নতুন করে ইতিহাস রচনার পথে এগোচ্ছি৷ বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনকারী আর ভারতীয় সেনার রক্ত একসঙ্গে বয়ে চলেছ৷ এই রক্ত এমন সম্পর্ক তৈরি করবে যা কেউ ভাঙতে পারবে না৷ যা কোনও কূটনীতির শিকার হবে না৷
আরও পড়ুন- বিয়ের অনুষ্ঠানে সিংহের সঙ্গে ছবি তুলে ভাইরাল দম্পতি
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ৫০ বছর স্বাধীনতা দিবস পালন করছে৷ আর ৭৫ বছর স্বাধীনতা পূর্তির দিকে এগিয়ে চলেছে ভারত৷ আগামী ২৫ বছর উভয় দেশের কাছেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ ব্যবসা এবং উদ্যোগে দুই দেশের সম্ভাবনা অনেকটাই এক৷ তেমনই সন্ত্রাসবাদের মতো ঝুঁকিও রয়েছে৷ এর বিরুদ্ধে আমাদের যেমন সতর্ক থাক থাকবে হবে, তেমনই লড়াই করার ডন্য সঙ্ঘবদ্ধও থাকতে হবে৷ দুই দেশের কাছেই গণতন্ত্রের শক্তি রয়েছে৷ এক সঙ্গে ভারত ও বাংলাদেশকে বিকাশের পথে এগিয়ে যেতে হবে৷ দুই দেশের সরকার সংবেদনশীলতাকে অনুধাবন করে এগিয়ে চলেছে৷ পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস রেখে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব৷ করোনাকালেও দুই দেশের মধ্যে সুষ্ঠ তালমিল ছিল৷ ভারতের ভ্যাকসিন বাংলাদেশের মানুষের উপকারে লাগছে৷ এর জন্য আমরা আনন্দিত৷