modi
নিজস্ব প্রতিনিধি: অন্তর্বর্তী বাজেট অধিবেশন শেষ হওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু বিরোধীদের জোট এখনও পর্যন্ত দানা বাঁধেনি। আর আদৌ দানা বাঁধবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে। এক কথায় বলতে হবে বিরোধীরা সেই আগের মতোই ছন্নছাড়া অবস্থাতেই রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিরোধী জোটকে আরও ‘ঘেঁটে’ দেওয়ার চেষ্টা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সংসদে জবাবী ভাষণ দিতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদী সুকৌশলে যেভাবে কংগ্রেস তথা বিরোধীদের নিশানা করেছেন, তাতে জোট আরও নড়বড়ে হয়ে গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। ঘটনা হল প্রধান বিরোধী শক্তি কংগ্রেসকেই মূলত উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে নিশানা করেছেন মোদী।
তিনি বলেছেন,”পরিবারতন্ত্রের চাপে কংগ্রেসের দোকান বন্ধ হতে চলেছে। বিরোধীদের এই বেহাল দশার জন্য একমাত্র দায়ী কংগ্রেস। গত দশ বছরে তারা দায়িত্বশীল বিরোধী দল হওয়ার সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছে। সেই কাজে ব্যর্থ হওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য বিরোধী বড় নেতাদের কণ্ঠরোধের চেষ্টাও করেছে কংগ্রেস।” সদ্য ‘ইন্ডিয়া’ জোটের অন্যতম শরিক তৃণমূল সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোটের সবচেয়ে বড় শরিক কংগ্রেসকে নজিরবিহীন আক্রমণ করেছেন। মমতার কটাক্ষ, কংগ্রেস এই লোকসভা নির্বাচনে ৪০টি আসনও পাবে তো? যেভাবে বিজেপি এতদিন কংগ্রেসকে আক্রমণ করে এসেছে, সে কথাই এবার শোনা গিয়েছে অন্যতম শরিক তৃণমূলের মুখে। উত্তরপ্রদেশের প্রধান বিরোধী দল সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব একতরফা ভাবে ১৬ টি আসনে তাঁদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিয়েছেন কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা না করেই। আর পাঞ্জাবে আম আদমি পার্টির সঙ্গে কংগ্রেসের জোট হচ্ছে না। সদ্য ‘ইন্ডিয়া’ জোট ছেড়ে বেরিয়ে গিয়ে এনডিএ জোটে সামিল হয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার। নীতিশের দলের অভিযোগ কংগ্রেসের কারণেই তাঁরা জোট ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন। সেই জায়গা থেকে বিরোধীদের পারস্পরিক দ্বন্দ্বকে সুকৌশলে আরও উস্কে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
আসলে মোদী ভাল করেই জানেন যে নির্বাচনে যদি একের বিরুদ্ধে এক পরিস্থিতি তৈরি হয় সেক্ষেত্রে বিজেপি বিরোধী সমস্ত ভোট এক জায়গায় চলে গেলে তাঁদের জেতার সম্ভাবনা বহু আসনে কমে যাবে। মূলত সেই কারণেই ‘ইন্ডিয়া’ জোট গঠিত হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রধানমন্ত্রী তথা গেরুয়া নেতৃত্ব চাইবেন সেই জোট নড়বড়ে হয়ে যাক। মূলত সেই লক্ষ্যেই প্রধানমন্ত্রী সংসদে কৌশলী বক্তব্য রেখেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। নিঃসন্দেহে এই কৌশল রাজনীতির ছাত্রদের কাছে শেখার মতো। সেই জন্যই কি বিজেপি মোদীর উপরে এতটা ভরসা করে? এই চর্চা যে চলতেই থাকবে তা স্পষ্ট।