কলকাতা: বিধানসভা নির্বাচনের মাত্র দিন ছয়েক আগে ভোট ইস্তেহার প্রকাশ করে চমকে দিয়েছে বিজেপি। সরকারি চাকরিতে মহিলাদের জন্য সংরক্ষণ থেকে শুরু করে বিনামূল্যে শিক্ষা, প্রায় গোটা গেরুয়া ইস্তেহার জুড়েই রয়েছে মহিলা ভোটের উপর বিশেষ নজর। এযাবৎ রাজ্যে আদিবাসী, মতুয়া প্রভৃতি সম্প্রদায়ের ভোট ব্যাঙ্ককেই বিজেপি পাখির চোখ করছে বলে মনে করা হচ্ছিল, কিন্তু ইস্তেহার প্রকাশে উল্টে গেছে সমস্ত অঙ্ক। এখন প্রশ্ন, এই চমকে চাকচিক্যে ভরা ইস্তেহার শেষ মুহূর্তের ভোট বাজারে কতটা প্রভাব ফেলতে পারবে?
এদিন বিজেপির তরফে ইস্তেহারে মহিলাদের জন্য বিশেষভাবে কী কী ঘোষণা করা হয়েছে তার দিকে একবার চোখ রাখা যাক। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, “রাজ্য সরকারের সমস্ত চাকরিতে মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণ করা হবে। ১৮ বছর হলেই মেয়েদের দেওয়া হবে এককালীন ২ লক্ষ টাকা। কেজি থেকে শুরু করে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত মেয়েদের শিক্ষা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে হবে। পরিবহনেও পাওয়া যাবে ছাড়। সারা রাজ্য জুড়ে পাওয়া যাবে ১ টাকায় স্যানিটারি ন্যাপকিন। মহিলাদের জন্য থাকবে সরকারের পক্ষ থেকে এককালীন ২০ হাজার টাকা করে ঋণের ব্যবস্থা। এছাড়া, তফশিলি জাতি-উপজাতি ও অন্যান্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণী ও পরিবারে কন্যা সন্তান জন্মালেই মিলবে ৫০ হাজার টাকা।”
বস্তুত, নির্বাচনী এই ইস্তেহারে নরেন্দ্র মোদী অমিত শাহের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক রাজ্যের গ্রামকেন্দ্রিক স্বল্পশিক্ষিত নাগরিক সমাজের দিকেই ফোকাস করেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ। প্রগতিশীল শহরকেন্দ্রিক যে নারীসমাজ, যাঁরা মূলত নারী পুরুষ সমানাধিকারের কথা বলে থাকেন বারবার, তাঁরা এই ইস্তেহারকে ঠিক কতটা স্বাগত জানাবেন? কীভাবেই বা বিজেপির মহিলা সর্বস্ব ইস্তেহারকে দেখবেন পুরুষেরা? উঠেছে প্রশ্ন।
স্যানিটারি ন্যাপকিন কিংবা প্রশাসনিক পদে মহিলাদের নিয়োগের মতো কিছু প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য হলেও, কন্যা সন্তানের জন্মে সরকারি সাহায্য কিংবা বিনামূল্যে পরিবহনের মতো প্রস্তাবগুলি কিন্তু অনায়াসেই গেরুয়া শিবিরের দিকে ব্যাক ফায়ার করতে পারে। আধুনিকমনস্ক নারীসমাজ এই ইস্তেহারের দিকে খানিক ভ্রু কুচকে তাকাবে, মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।