বীরেন ভট্টাচার্য, নয়াদিল্লি: বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনাকে যে হাল্কাভাবে নেওযা হচ্ছে না, গতকাল রাতেই তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আজ সকালে রাজ্যপালের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার কয়েকঘণ্টার মধ্যেই রাজ্যের মুখ্যসচিব ও ডিজিকে ডেকে পাঠাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। ১৪ ডিসেম্বর তাঁদের ডেকে পাঠানো হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রের খবর। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিবের তরফে রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
দু’দিনের রাজ্য সফরের দ্বিতীয়দিনে নিউটাউন থেকে ডায়মন্ডহারবার যাচ্ছিলেন বিজেপির সর্রভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। শিরাকোলে তাঁর কনভয়ে হামলা চালানো হয়। যদিও জেপি নাড্ডার কোনও আঘাত লাগেনি। তবে তাঁর সঙ্গে থাকা ওপর দুই নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয় এবং মুকুল রায় আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজেপি। এদিকে, এই ঘটনার পরেই রাজ্য প্রশাসনের দুই শীর্ষ কর্তা মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রর থেকে রিপোর্ট তলব করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। সন্ধ্যা নাগাদ রাজভবনে পৌঁছান নবান্নের দুই শীর্ষ আমলা। যদিও বৈঠক শেষে অসন্তোষ প্রকাশ করে রাজ্যপাল টুইট করে জানান, হামলার ঘটনা নিয়ে বিশদে কোনও ব্যাখা দিতে পারেননি দুই আধিকারিক। আজ সকালে জেপি নাড্ডার ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে রিপোর্ট পাঠান রাজ্যপাল।
তারপরেই রাজ্য প্রশআসনের দুই শীর্ষ আধিকারিককে ডেকে পাঠানো হয় কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যের জবাব চাওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। গতকালই মুখ্যসচিব ও ডিজির সঙ্গে আলোচনার পর রাজ্যপাল জানিয়ে দেন পরদিন দুপুরে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করবেন তিনি। এদিন ১২টায় সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর আচরণ দুর্ভাগ্যজনক৷’’ একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে ‘আগুন নিয়ে না খেলা’র জন্য সতর্ক করে দেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। ‘মুখ্যমন্ত্রী সংবিধান থেকে সরে আসতে পারেন না’ বলেও এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে মন্তব্য করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর৷
জেপি নাড্ডার ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘গতকালের ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক৷ আগুন নিয়ে খেলা উচিৎ নয় মুখ্যমন্ত্রীর৷’’ আইনশৃঙ্খলার শাসনকে হাল্কা ভাবে নেওয়া উচিৎ নয় বলেও এদিন মন্তব্য করেন রাজ্যপাল। যদিও এভাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্যের বিরুদ্ধে তোপ দাগার নিন্দা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘‘উনি রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। এভাবে সাংবাদিক সম্মেলন করা ওনার উচিৎ নয়।’’ রাজ্যের সঙ্গে একাধিক ইস্যুতে বারবার সংঘাতে জড়িয়েছে রাজভবন এবং নবান্ন। তারমধ্যেই জেপি নাড্ডার হামলার গটনা। তবে সাম্প্রতিক অতীতে রাজ্যের মুখ্যসচিব ও জিডিকে ডেকে পাঠানোর মতো ঘটনা বিরল বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷