millionaire
কলকাতা: বাবার চাকরি নিয়ে ছেলে লাখপতি৷ অথচ অনাদারে অবহেলায় দিন কাটছে মায়ের৷ দিনযাপনের উপায় নেই৷ এমতাবস্থায় আদালতের দ্বারস্থ হলেন এক মা৷ কান্নায় ভেঙে পড়লেন এজলাসে৷ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গুণধর ছেলেকে এজলাসে তলব করলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়৷
ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে সোমবার কাঁচরাপাড়া থেকে কলকাতা হাই কোর্টে উপস্থিত হয়েছিলেন ৬৭ বছরের বৃদ্ধা স্বপ্না কর্মকার। তিনি আদালতকে জানান, তাঁর স্বামী রেলের কাঁচরাপাড়া ওয়ার্ক শপে কর্মরত ছিলেন৷ নাম রবীন্দ্রনাথ কর্মকার। ২০০০ সালের নভেম্বর মাসে তিনি মারা যান। সেই সময় চাকরির সুযোগ থাকলেও, স্বপ্নদেবী নিজে স্বামীর চাকরি নেননি৷ বরং বড় ছেলে চিরঞ্জিৎকে সেই চাকরি দিয়ে দেন। এদিকে, বাবার চাকরি পাওয়ার পরেই কাঁচরাপাড়া থেকে তলপিচলপা গোটান বড় ছেলে। এদিন ভরা এজলাসে হাউ হাউ করে কেঁদে ফেলেন বৃদ্ধা মা৷ তিনি বলেন, “ছেলে মাসে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা বেতন পায়। বছরে তিনবার বাইরে ঘুরতে যায়। অথচ নিজের বৃদ্ধ মা এবং ছোট ভাই-বোনকে একবারও কাঁচরাপাড়ার বাড়িতে দেখতে আসে না। টাকার অভাবে আমার ফিজিও থেরাপিও বন্ধ৷ ওষুধটুকু কেনারও সামর্থ্যও নেই।” তিনি আরও জানান, তাঁর কোষ্ঠকাঠিন্য রয়েছে। দেহের ডান অংশ স্পন্ডেলাইটিসে আক্রান্ত। চিকিৎসকেরা মাথায় সিটি স্ক্যান করাতে বলেছেন৷ প্রয়োজনে এমআরআইও করাতে হতে পারে। তিনি বলেন, “আমি বড় ছেলেকে বলেছিলাম, ডাক্তার অনেক পরীক্ষা করাতে বলেছেন। কিছু টাকা দিতে পারবি? ও মুখের ওপর না বলে দিয়েছে৷’’
এই অভিযোগ শুনেই স্তম্ভিত বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়৷ সাধারণত তাঁর দরবারে যাঁরা আসেন, তাঁরা মূলত চাকরি না পাওয়া বঞ্চিত৷ তবে এভাবে একজন মায়ের আর্তি শুনে তিনি বিচলিত হয়ে ওঠেন৷ তিনি হাই কোর্টের রেজিস্টার জেনারেল চৈতালী চট্টোপাধ্যায়কে মৌখিক নির্দেশে জানান, আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার সকাল ১১টার মধ্যে স্বপ্না কর্মকারের বড় ছেলে চিরঞ্জিৎ কর্মকারতে আদালতে সশরীরে হাজিরা দিতে হবে।
অভিযুক্ত চিরঞ্জিৎ চট্টোপাধ্যায় বর্তমানে রেলের শিয়ালদহ গার্ড ওয়াক শপে কর্মরত। তিনি আদালতের নির্দেশ মতো আগামীকাল হাজিরা না দিলে পুলিশ দিয়ে আদালতে তুলে নিয়ে আসা হবে বলেও নির্দেশও দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।