ট্রেন? সে তো লোকদেখানো, বড়লোকদের জন্য সরকার, বিদ্রোহ ক্ষুধার্ত শ্রমিকদের

পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজের নিজের রাজ্যে ফেরানোর জন্য সরকারের তরফে নেওয়া হয়েছে উদ্যোগ। চালু হয়েছে শ্রমিক ট্রেন। কিন্তু তা ঘিরেও অভিযোগ উঠছে। এবার অভিযোগ করছেন খোদ শ্রমিকরাই। কেউ বলছেন, ট্রেন? সে তো লোকদেখানো। কেউ আবার বলছেন, সরকার? সে তো বড়লোকদের জন্য। দিল্লি-উত্তরপ্রদেশ সীমান্তে আটকে পড়া অসহায় পরিযায়ী শ্রমিকদের মুখে শোনা গেল এমনই সব অভিযোগ।

নয়াদিল্লি: পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজের নিজের রাজ্যে ফেরানোর জন্য সরকারের তরফে নেওয়া হয়েছে উদ্যোগ। চালু হয়েছে শ্রমিক ট্রেন। কিন্তু তা ঘিরেও অভিযোগ উঠছে। এবার অভিযোগ করছেন খোদ শ্রমিকরাই। কেউ বলছেন, ট্রেন? সে তো লোকদেখানো। কেউ আবার বলছেন, সরকার? সে তো বড়লোকদের জন্য। দিল্লি-উত্তরপ্রদেশ সীমান্তে আটকে পড়া অসহায় পরিযায়ী শ্রমিকদের মুখে শোনা গেল এমনই সব অভিযোগ।

বাড়ি ফেরার পথেই কেউ মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছেন, কেউ সন্তানের জন্ম দিয়েও নামমাত্র বিশ্রামে ১৫০ কিলোমিটার পথ হেঁটে বাড়ি ফিরছেন। পরিযায়ী শ্রমিকদের এই দুর্দশার ছবি আকছার উঠে আসছে সংবাদের শিরোনামে। এদিকে দিল্লি-উত্তরপ্রদেশ সীমান্তেও আটকে পড়েছেন বহু শ্রমিক। শ্রমিক ট্রেন চালু হওয়ায় ভেবেছিলেন, বাড়ি ফিরতে পারবেন। কিন্তু তা আর হয়ে উঠল না। অবশেষে ওভারব্রিজের নীচেই কাটাতে হচ্ছে দিন। শুক্রবার হরিয়ানার বল্লভগড় থেকে হেঁটে দক্ষিণ পূর্ব দিল্লিতে যাচ্ছিলেন ২৫ বছরের যুবক সূর্যপ্রকাশ।

 

উত্তরপ্রদেশের পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, ফেরার কোনও ব্যবস্থা নেই। সূর্যপ্রকাশ বলেন, 'যদি কোনও ব্যবস্থাই না থাকে, তাহলে আমাদের হেঁটে ফিরতে দিন।' এই প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, 'শ্রমিক ট্রেনের ক্ষেত্রে অনলাইনে টিকিট নাম রেজিস্টার করার কথা বলে হয়েছিল। ১৫ দিন হয়ে গেল। কিন্তু কোনও ফোন কল বা মেসেজ পাইনি। আসলে কোনওই ব্যবস্থা নেই। সব লোকদেখানো।'

ভাইয়া রায়দাস দিল্লিতে কাজ করেন। তাঁর স্ত্রী সন্তানসম্ভবা। অন্যদিকে ঘরে মা ক্যান্সারে আক্রান্ত। ৩০ বছরের যুবক বলেন, 'একদিকে মায়ের জন্য চিন্তা হচ্ছে। অন্যদিকে স্ত্রী। মাঝ বরাবর দাঁড়িয়ে আছি মনে হচ্ছে।' টিকিট বুক করতে পারছেন না তাঁর মতো অনেকেই। ১০ দিন আগে এক সাইবার ক্যাফের মালিককে অগ্রিম ৩ হাজার টাকা দিয়েছিলেন টিকিট কাটার জন্য। ভাইয়া রায়দাস বলেন, 'ওয়েবসাইট খুলতে না খুলতেই টিকিট শেষ হয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।' অন্যদিকে ৬ বছরের মেয়ে আঁচল ও ৮ মাসের অর্পিতাকে নিয়ে পায়ে হেঁটেই ফিরছেন ২৮ বছরের সঙ্গীতা দেবী।

মহম্মদ মিনহাজ বিহারের বাসিন্দা। মোট ৩৫ জনের একটি দল একটি বেসরকারি বাসে করে ফিরবেন ঠিক করেছিলেন। যাত্রী পিছু ৩,০০০ টাকা নগদ জমাও দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত রাত কাটাতে হয়েছে ফ্লাইওভারের নীচে। তাঁদের দলেরই ২২ বছরের যুবক মহম্মদ ইসরাফির শ্রমিক ট্রেনের টিকিট কাটার জন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। ইসরাফির বলেন, 'কখনও তিনি বলছেন, ওয়েবসাইট খুলছে না। কখনও বলছেন, টিকিট কাটা যাচ্ছে না। ৩০ মে পর্যন্ত টিকিট পাওয়া যাবে না। এতদিন পর্যন্ত আমরা এখানে থাকতে পারব না।' তিনি আরও বলেন, 'সরকার বড়লোকদের জন্য। আমাদের মতো গরিবের কথা ভাবে না।'

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *