‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ তৃণমূল নেতাদের সন্তান গায়েব করে দেওয়ার হুমকি দিলীপের

‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ তৃণমূল নেতাদের সন্তান গায়েব করে দেওয়ার হুমকি দিলীপের

 

মেদিনীপুর: নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তেজনা৷ করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা উড়িয়ে রাজপথ দখলের লড়াই ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে শাসক-বিরোধী শিবির৷ চলছে মিটিং-মিটিল৷ অব্যাহত ভোটের হিংসা৷ উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে ফের দিলীপ ঘোষের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে তৈরি হল বিতর্ক৷ পশ্চিম মেদিনীপুরে দলীয় সভা সরাসরি ব্যক্তি আক্রমণের পথে হাঁটলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ৷

বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলার নিন্দা করতে করতে গিয়ে সরাসরি ‘বউ ছেলে মেয়ের মুখ’ না গদেখতে দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দিলীপ৷ প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে দিলীপের হুঁশিয়ারি, ‘‘যা সর্বভারতীয় সভাপতির কনভয়ে হামলা করেছেন, তাঁদের ছেলেমেয়েদের গায়েব করে দিতে পারি৷’’ দিলীপের এই মন্তব্য ঘিরে তৈরি বিতর্ক তৈরি হতেই পাল্টা সরব হয়েছে তৃণমূল৷ ‘রাস্তার গুন্ডা’ বলে দিলীপকে পাল্টা আক্রমণ শাসক দলের৷

শুক্রবার দাঁতনে সভা করেন দিলীপ৷ সেখান তিনি জানান, ‘‘আমি এখানে দাঁড়িয়ে বলি, সামনের নির্বাচনে কোনও পুলিশকে বুথের কাছাকাছি আসতে দেব না৷ দিল্লির বন্দুকধারি পুলিশ থাকবে৷ তারাই বুথ সামলাবে৷ রাস্তাতে কেউ ভয় দেখালে শুধু তার  নাম লিখে রাখুন৷ ফলাফল বের হলেই গ্রামছাড়া করা হবে৷ ভোটে বিশৃঙ্খলা হলে শহিদবেদী বানিয়ে দেব৷ বুকের উপর গাড়ি চালিয়ে দেব৷ ওদের মা-বাবাকে বলবেন, দিন শেষ৷ একটু পাল্টান৷এখানেও থামেননি দিলীপ৷ তাঁর আরও দাবি, ‘‘পঞ্চায়েতে যারা টাকা আত্মসাৎ করেছে, তাদের তা ভোগ করতে দেব না আমরা৷ ওদের বউ ছেলে মেয়ের মুখ দেখতে দেব না৷ যারা পঞ্চায়েতের টাকা আত্মসাৎ করেছে, আমরা চাইলেই তাঁদের হাত কেটে রেখে দিতে পারি৷ কিন্তু, আমরা সেই পথে যাইনি৷ কখন যেন মনে করবেন না, আমরা পারি না৷ দরকার হলে তার নমুনা দেখাতে পারি৷ এই মাসটা সময় দিয়েছি৷ সোজা হয়ে যান৷ অনেক নেতার ছেলেমেয়ে প্রতিবেশী রাজ্য পড়ে৷ সেখানে আমাদের সরকার৷ আমি যদি একটা ফোন করি, তাদের ছেলেমেয়ে আর বাড়ি ফিরবে না৷ চাইলে তুড়ি মেরে গায়েব করতে পারি৷’’

দিলীপের এই মন্তব্যে পাল্টা তোপ দাগেছে তৃণমূল৷ স্থানীয় তৃণমূল নেতা অজিত মাইতি জানান, ‘‘দিলীপ ঘোষ রাস্তার গুন্ডা৷ কখনো বলছেন গুলি করে দেবে৷ কখনও পুলিশকে হুশিয়ারি দিচ্ছেন৷ আমি বলি, দিলীপ ঘোষ আপনি তৈরি থাকুন, জনতা জবাব দেবে৷’’

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, একজন জনপ্রতিনি হয়ে বিরোধী নেতাদের পরিবারকে কাঠগড়ায় তুলে এমন মন্তব্য করা যায়? রাজনৈতিক লড়াই থাকতে পারে, আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ চলতেই পারে, তবে পরিবার তুলে কেন এহেন আক্রমণ? কোনও অঘটন ঘটলে তার দায় নেবে কে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 3 =