নয়াদিল্লি: নির্ধারিত দিনের দু’দিন আগেই বৈঠক ঘিরে চাপা উত্তেজনা ছিল দিল্লিতে। কৃষকদের দাবি মেনে এবার বৈঠকের আগে কোনও পূর্ব শর্তও ছিল না। যদিও বৈঠকে কাজের কাজ কিছুই হল না। কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া প্রস্তাব পত্রপাঠ খারিজ করে দিল কৃষকদের প্রতিনিধি দল। এদিনের বৈঠকে কেন্দ্রের তরফে কৃষি বিল নিয়ে আলোচনার জন্য একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। এদিনের বৈঠকেও সমাধান সূত্র না মেলায় আগামী বৃহস্পতিবার ফের বৈঠক হবে।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর, পীযূষ গোয়েল এবং শিল্প মন্ত্রকের রাষ্ট্র মন্ত্রী সোম প্রকাশ। দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে বৈঠকে কৃষকদের তরফে যোগ দিয়েছিলেন ৩৫টি সংঘটনের সদস্য। কৃষকদের তরফে নয়া আইন নিয়ে আগের আইন বাতিলের দাবি তোলা হয়েছে, যদিও তা মানতে নারাজ কেন্দ্রীয় সরকার। বরং কৃষকদের অন্যভাবে বিক্ষোভ থামানোর অর্থাৎ আইন বদলের কোনও বিকল্প চায় কেন্দ্র। অন্যদিকে কমিটি গঠনের প্রস্তাব নিয়ে কৃষকদের দাবি, ‘‘এখন কমিটি গঠনের সময় নয়, আইন বাতিল করতে হবে।’’
এদিনের বৈঠকে বসার আগে বিজেপি সভাপতি জেপি নাডডার বাড়িতে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ, পীযূষ গোয়েল, কৃষি মন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর। গত বাদল অধিবেশনে কৃষি বিল পাস করে কেন্দ্রীয় সরকার। কৃষকদের সংঘটনগুলির দাবি, এই আইনের ফলে ফসলের নূন্যতম দামের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এই আইনের ফলে কালোবাজারি এবং মজুদদারিতে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। বিল পাস হওয়ার থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের এই বিলের বিরুদ্ধে পথে নেমে এসেছে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন পঞ্জাব এবং হরিয়ানার কৃষকরা। পরে সেই বৈঠকে যোগ দেন অন্যান্য রাজ্যের কৃষকরাও। প্রায় ৫০০টি কৃষক সংঘটন এই আন্দোলনে যুক্ত বলে জানানো হয়েছে বিক্ষোভকারীদের তরফে।কৃষকদের বিক্ষোভের জেরে উত্তাল হয়েছে পঞ্জাব। ট্রেন চলাচল থেকে শুরু করে বিভিন্ন পরিষেবায় ব্যাঘাত ঘটেছে। একাধিক ট্রেনের যাত্রা পথ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়।
এরপরেই ‘দিল্লি চলো’ কর্মসূচি নেয় কৃষকদের সংঘটন। পঞ্জাব সীমানা পেরিয়ে এলেও হরিয়ানা সীমানায় তাঁদের আটকে দেওয়া হয়। পুলিশের ব্যারিকেড নদীর জলে ফেলে দিয়ে এবং পুলিশের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্বক মেজাজে মোকাবিলা করেন বিক্ষোভরত কৃষকরা। তারপরেই দিল্লি প্রবেশ করেন তাঁরা। এদিকে কৃষকদের আন্দোলনের জেরে দিল্লির সঙ্গে অন্যান্য রাজ্যের সীমানা লাগোয়া মেট্রো স্টেশন গুলি বন্ধ রাখা হয়। সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে কৃষক- পুলিশ সংঘর্ষের ছবি। একাধিকবার বৈঠক হলেও তা ভেস্তে যায়। কৃষকদের আন্দোলনকে সমর্থন জানান কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তাঁকে ভুল বোঝানো হয়েছে বলে দাবি করে বিজেপি।