একাধিক প্রেম, বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক! বলিউডে ব্যর্থ হেয় ছাড়েন দেশ, চেনেন মিঠুনের প্রথম স্ত্রীকে

একাধিক প্রেম, বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক! বলিউডে ব্যর্থ হেয় ছাড়েন দেশ, চেনেন মিঠুনের প্রথম স্ত্রীকে

 

মুম্বই: তিনি ‘মহাগুরু’৷ রুপোলি পর্দায় তাঁর উষ্ণ সংলাপ দর্শকদের মাতিয়ে রাখে৷ কখনও তিনি সাদা পোশাকে সজ্জিত ‘ডিস্কো ড্যান্সার’৷ জুলফি কামানো এক যুবক একদা ঝড় তুলেছিল উপমহাদেশের বহু তরুণীর মনে৷ যার সাক্ষী পোড়খাওয়া সিনেপ্রেমী প্রজন্ম৷ 

আরও পড়ুন- আসানসোল আদালত ‘আইনজীবী’ হয়ে হাজির শতাব্দী, কী বললেন অনুব্রতরে নিয়ে?

১৯৭৯ সালে অভিনেত্রী যোগীতা বালিকে বিয়ে করেন মিঠুন চক্রবর্তী৷ কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না, এর আগেও একবার বিবাহ বন্ধনে বাঁধা পড়েছিলেন বাঙালি অভিনেতা৷ ১৯৭৯ সালেই তাঁর জীবনে এসেছিলেন হেলেনা লিউক নামে এক নারী৷ তবে সেই দাম্পত্য টিকেছিল মাত্র চার মাস৷ কিন্তু জানেন কি কে এই হেলেনা? 

মিঠুন

উত্তরের খোঁজ করতে গিয়ে জানা গেল, হেলেনা লিউক একজন মডেল-অভিনেত্রী৷ হেলেনার বাবা ছিলেন তুরস্কের৷ মা অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান খ্রিস্টান। ১৯৭০-এর দশকে বলিউডে ভাগ্য পরীক্ষা করতে এসেছিলেন৷ ১৯৮০ সালে ‘জুদাই’ ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে দেখা গিয়েছিল হেলেনাকে৷ কিন্তু, জিতেন্দ্র-রেখার ক্যারিশ্মায় ফিকে হয়ে গিয়েছিল তাঁর উপস্থিতি৷ 

পরে ‘সাথ সাথ’ (১৯৮২) ছবিতেও একটি ছোট চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন মিঠুনের প্রথম স্ত্রী। তাঁকে দেখা গিয়েছিল ‘আও পেয়ার করেঁ’ (১৯৮৩), ‘দো গুলাব’ (১৯৮৩) এবং ‘ভাই আখির ভাই হোতা হ্যায়’ (১৯৮২) নামে আরও ৩টি ছবিতে৷ যেগুলির কোনওটিই বক্সঅফিসে সাড়া ফেলতে পারেনি৷ বলিউডে দাগ কাটতে পারেনি হেলেনার কোনও চরিত্র৷ 

হেলেনা

তবে চলচ্চিত্র জগতে পা রাখার আগে ৯ বছর গুজরাতি নাটকে অভিনয় করেছিলেন হেলেনা৷ তবে গুজরাতি ছবিতে সে ভাবে সুযোগ পাননি৷ অতঃপর বলিউডে ভাগ্যান্বেষণে চলে আসেন৷ জানা যায়, নাটকের স্বার্থে গুজরাতি ভাষা লিখতে, পড়তে এবং বলতেও শিখেছিলেন।

সেই সময় বলিউডে কান পাতলেই শোনা যেত একটি গুঞ্জন৷ অভিনেতা-মডেল জাভেদ খানের সঙ্গে নাকি কলেজ জীবন থেকেই প্রেমের সম্পর্ক ছিল হেলেনার। ৪ বছর প্রেমপর্বের পর আচমকাই তাঁদের মধ্যে দূরত্ব চলে আসে৷ আর সেই এই বিচ্ছেদের মুহূর্তেই নাকি হেলেনার জীবনে এন্ট্রি নেন মিঠুন৷ চটজলদি বিয়েও করে নেন তাঁরা৷ তবে মাত্র চার মাসেই দাম্পত্যে ইতি পড়ে তাঁদের৷ 

হেলেনা

কেন এত তাড়াতাড়ি বিচ্ছেদ?  শোনা যায়, জাভেদ খানের সঙ্গে সম্পর্কে ধাক্কা খেয়েই নাকি মিঠুনের দিকে ঢলেছিলেন হেলেনা। এদিকে, হেলেনার সঙ্গে সম্পর্কের আগে অভিনেত্রী সারিকার সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করছিলেন মিঠুন। কিন্তু সেই প্রেম হারিয়ে শূন্যতাবোধে ভুগছিলেন ‘মৃগয়া’র নায়ক। এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে দু’জনের পরিচয়, প্রেম ও বিয়ে৷ 

ইতিমধ্যে হেলেনার জীবনে ফের উঁকি দেন জাভেদ৷ দুর্বল হয়ে পড়েন হেলেনা৷ হাত ছাড়েন মিঠুনের৷ শোনা যায় ‘মহাগুরু’র পরিবারিক সমস্যাও তাঁদের দাম্পত্যকে প্রভাবিত করেছিল৷ মিঠুনকে ছেড়ে জাভেদের কাছে ফিরলেও, সেই প্রেম পূর্ণতা পায়নি৷ পরে ১৯৮৭ সালে উদীয়মান অভিনেতা বিজয়েন্দ্র ঘটগের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের গুঞ্জন কানে আসে৷ 

mithun

সেলুলয়েডে হেলেনাকে সম্ভবত শেষ দেখা গিয়েছিল ১৯৮৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘এক নয়া রিস্তা’ ছবিতে৷ এর পর আর তাঁর খোঁজ রাখেনি বলিপাড়া৷ হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কেরিয়ার গড়তে পারেননি হেলেনা৷ থিতু হয়নি ব্যক্তিগত জীবন৷ অতঃপর তিনি পাড়ি দেন আমেরিকা৷ নিউ ইয়র্কে গিয়ে একটি বিমান সংস্থার ফ্লাইট অ্যাটেন্ড্যান্ট হিসেবে নতুন জীবন শুরু করেন৷ সেই চাকরিই ধরে রাখেন৷ 

হেলেনা

কেরিয়ারে ব্যর্থতা, সম্পর্কের টানাপোড়েন, বিচ্ছেদ- অনেক ব্যর্থ অভিনেত্রীর সঙ্গেই মিল রয়েছে হেলেনার৷ তবে আজও তাঁর নাম বলিউডের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে, মিঠুন চক্রবর্তী নামে এক সফল অভিনেতার সঙ্গে সূত্র ধরে৷