কলকাতা: রাজ্য সফরে এসেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বুধবার রাতে কলকাতায় পৌঁছে হেলিকপ্টারে করে বাঁকুড়ার আদিবাসী প্রধান চতুর বিজেপি কর্মীর বাড়িতে থাকেন তিনি। সেখানে মধ্যাহ্নভোজনও সারেন। অমিত শাহের বাংলা সফর এবং মধ্যাহ্নভোজনকে কটাক্ষ করলেন সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম। সাংবাদিক বৈঠক করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে একহাত নেন তিনি।
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, বিশ্বের ক্ষুধার তালিকায় ভারতের অবস্থান আরো খারাপ হয়েছে। এশিয়ার অনেক দেশের তুলনায় ভারতের অবস্থা খারাপ। অন্নহীন মানুষ অন্ন চাইছেন, আর এদিকে তিনি কার বাড়িতে গিয়ে খাচ্ছেন সেটা নিয়ে নাটকীয় প্রদর্শন চলছে। প্রদর্শনীমূলক ভোজন দেখছে রাজ্যবাসী, মিডিয়ার দৌলতে কারোরই সেটা অজানা নয়। এই ধরনের প্রদর্শনী মূলক আচরণ মার্কিন প্রেসিডেন্টের দেখা গেছে। মানুষের যা চাহিদা, তার থেকে নজর ঘুরিয়ে নিজেদের চাহিদা পূরণ করে এই ধরনের রাজনীতিবিদরা।
সেলিম আরো বলেন, কলাপাতায় খাওয়ার নাটক এর আগেও দেখা গেছে, ২০১৯ সালের নির্বাচনের আগে এই দৃশ্য দেখেছিল সকলে। কিন্তু তার কথায়, যে এলাকায় গিয়ে ভোজন করছেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সেই এলাকার পরিযায়ী শ্রমিকরা যখন লকডাউনের সময় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে গিয়েছিল, তাদের দিকে ফিরেও তাকায়নি কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্বয়ং কোনও খোঁজ নেননি। এক্ষেত্রে সেলিম মন্তব্য করেন, কিছুদিন আগে আহমেদাবাদের এক কারখানায় একাধিক শ্রমিকের মৃত্যু হয়, সেখানে কয়েকজন কিশোর এবং যুবকও ছিল। কিন্তু সেখানে গিয়ে কোনরকম সহানুভূতি দেখাননি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। যদি জনসংযোগ করতে হয় তাহলে সেখানে আগে যাওয়া উচিত ছিল।
একইসঙ্গে বাংলার প্রসঙ্গ টেনেও তৃণমূল এবং বিজিপির সরকারকে একহাত নেন সিপিএম নেতা। দাবি করেন, একাধিক ক্ষেত্রে মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলায় অরাজগতা সৃষ্টি করেছে দুই দলের নেতা, কর্মীরা। একাধিক জায়গায় ধর্ষণ, গণধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু সেসব ক্ষেত্রে কোন এরকম পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। সেলিমের কথায়, এই সমস্ত লোকেদের যদি ন্যূনতম লজ্জাবোধ থাকতো, তাহলে এইভাবে মধ্যাহ্নভোজ করতে যেতেন না। বরং যারা বিপদে পড়ে রয়েছে তাদের খবর নিতেন, সাহায্য করতেন। তিনি আরো বলেন, আমাদের রাজ্যে বিজেপি এবং তৃণমূল ভোট রাজনীতির স্বার্থে একদিকে কর্পোরেট পুঁজির সাহায্য নিয়ে মানুষের দারিদ্রতা, বেকারত্বের সমস্যা বাড়িয়ে দিচ্ছে এবং শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যের সুযোগকে কমিয়ে দিচ্ছে।
একই সঙ্গে ধর্মের রাজনীতির প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূল এবং বিজেপিকে একহাত নেন তিনি। বলেন, মানুষের নজর ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য জাতপাত, ধর্ম, মন্দির এবং মসজিদ করে মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করছে এরা। বাংলার সংস্কৃতি এসব মেনে নেবে না কারণ বাংলার সংস্কৃতি এবং বাংলার রাজনীতিতে ধর্মের কোনও স্থান নেই।