মেঘভাঙা বৃষ্টিতে ফাটল সিকিমের লোনাক হ্রদ, হড়পা বান তিস্তায়, নিখোঁজ বহু সেনা জওয়ান

মেঘভাঙা বৃষ্টিতে ফাটল সিকিমের লোনাক হ্রদ, হড়পা বান তিস্তায়, নিখোঁজ বহু সেনা জওয়ান

army jawan

শিলিগুলি: বিদায়বেলায় বর্ষার তাণ্ডব৷ মেঘভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত সিকিম৷ হড়পা বাণে বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গ৷ বাড়তে শুরু করছে নদীর জলস্তর৷ বুধবার সকালে তিস্তা নদীতে হড়পা বান আসে। তলিয়ে যায় সেনা ট্রাক ও গাড়ি৷ ক্ষতিগ্রস্ত সেনা ছাউনি৷ বেশ কয়েকজন সেনার খোঁজ মিলছে না বলে সূত্রের খবর। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ৷ নিখোঁজ জওয়ানদের তন্নতন্ন করে খোঁজা হচ্ছে৷ 

এদিন মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে ফেটে পড়ে উত্তর সিকিমের লোনক হ্রদ৷ মূল ভূখণ্ড থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে চুংথাম। বিপুল জলরাশি তিস্তায় এসে মেশায় দুর্যোগের মুখে বাংলা। এলাকায় ধস নামতে শুরু করেছে বলে জানা যাচ্ছে।

মেঘভাঙা বৃষ্টিতে উত্তর সিকিমের লাচেন উপত্যকার লোনক হ্রদ উপচে পড়ে। চুংথাম বাঁধ ভেঙে বিপুল পরিমাণ জল চলে আসে তিস্তায়৷ যার জেরে মুহূর্তের মধ্যে তিস্তার জলস্তর একলাফে ১৫ থেকে ২০ ফুট বেড়ে যায়। দু’কুল ছাপিয়ে ওঠে জল৷ শুরু হয় পাহাড়ি সিকিমে তিস্তার ধ্বংসলীলা৷ জলের ব্যাপক স্রোতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সিংতামে সেনার একটি ছাউনি৷ ২৩ জন সেনা জওয়ানের কোনও খোঁজ মিলছে না। ভেসে গিয়েছে প্রায় গোটা ছাউনি৷ জলের তলায় চলে গিয়েছে সেনার গাড়ি৷ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে সেনা৷ 

পাহাড়ে  রুদ্ররূপে তিস্তা যে ধ্বংসলীলা শুরু করেছে, তা নিয়ে চিন্তা বাড়ছে সমতলেও। তিস্তায় হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলার বিস্তীর্ণ অংশের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে তিস্তা৷ এর পর তা বাংলাদেশে ঢুকেছে৷ তার পর এসে মিশেছে ব্রহ্মপুত্রের সঙ্গে। ফলে পাহাড়ে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়লে চিন্তা বাড়বে জলপাইগুড়ি-সহ গোটা উত্তরবঙ্গ৷ উদ্বেগ বাড়বে বাংলাদেশেও।

সিকিমের চুংথামে হ্রদ ফেটে তিস্তার জলস্তর বৃদ্ধির প্রভাব ইতিমধ্যেই পড়তে শুরু করেছে তিস্তার উপর গড়ে ওঠা একাধিক ব্যারাজে। প্রশাসনের আশঙ্কা, হড়পা বানের জেরে জলস্তর ২৫ থেকে ২৬ মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। জলস্তর বাড়লে ভাসবে তিস্তার দু’পাশে থাকা গাজলডোবা ব্যারাজ, দোমহনি, মেখলিগঞ্জ, হলদিবাড়ি ও জলপাইগুড়ি শহর। ক্ষতির মুখে পড়তে পারে  বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকাও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *