কলকাতা: একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে নানা বিষয়কে কেন্দ্র করে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে বাংলার রাজনৈতিক পরিস্থিতি। এক দিকে যেমন গত লোকসভা নির্বাচনের সাফল্যকে হাতিয়ার করে মসনদ দখলের লড়াইয়ে ঝাঁপাচ্ছে বিজেপি, অন্যদিকে তেমনই ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া তৃণমূলও। পিছিয়ে নেই বাম-কংগ্রেস জোটও। এমতাবস্থায় দলবদলের কালো মেঘ দেখা দিয়েছে শাসক দলের আকাশে। সব মিলিয়ে সরগরম ভোট পূর্ববর্তী রাজনৈতিক পশ্চিমবঙ্গ।
এদিন প্রাক্তন তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারীর দুর্গ বলে পরিচিত নন্দীগ্রাম থেকে ভোটে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী নির্বাচনের আগে সম্ভবত এটাই তৃণমূলের মাস্টার্স স্ট্রোক, মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর এই নতুন সিদ্ধান্তকে এদিন তীব্র কটাক্ষ করলেন বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটের আগেই হার স্বীকার করে নিয়েছেন, এদিনের সিদ্ধান্তকে এভাবেই কটাক্ষ করেছেন যাদবপুরের বাম বিধায়ক। তাঁর কথায়, ‘‘ভবানীপুরে মুখ্যমন্ত্রী জিততে পারবেন না, সেটা বুঝতে পেরে নিজের জন্য সব থেকে নিরাপদ আসনটা সবার আগে বেছে নিলেন৷ এভাবে পরাজয় স্বীকার করে নিলেন তিনি৷ সেই সঙ্গে বিজেপিকে জানালেন, আমি তোমাদের পিছনে আছি।’’ তৃণমূল ও বিজেপিকে পরাস্ত করতে হবে এটা পশ্চিমবঙ্গের মানুষ জানে বলেও দাবি করেছেন সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী কেন্দ্র ভাবানীপুর গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির থেকে তৃণমূল এগিয়ে ছিল মাত্র ৩১৬৮টি ভোটে৷ বাম-কংগ্রেস মিলিত ভোট ছিল ১৩ হাজারের কাছাকাছি৷
এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘মাস্টার্স স্ট্রোক’কে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ গেরুয়া শিবির। তবে আক্রমণ করতেও ছাড়েননি তাঁরা। এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করলেন নন্দীগ্রামে প্রার্থী হবেন৷ উনি আর কত জায়গায় দাঁড়াবেন? আসলে নীচের তলা থেকে তৃণমূল কর্মীরা সরে যাচ্ছেন৷ তাদের আটকাতেই এসব করছেন তিনি৷’’ এখানেই শেষ নয়, এভাবে তৃণমূল কংগ্রেস নিজেদের ডুবে যাওয়া নৌকোকে তীরে ভেড়াতে পারবে না বলেও দাবি করেছেন শমীক ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা ভবানীপুরেও চমক দেব৷’’ প্রসঙ্গত, এদিন নন্দীগ্রামের জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন নন্দীগ্রাম তাঁর ‘লাকি‘ জায়গা৷ তাই তিনি সেখান থেকেই এবারের ভোটে লড়বেন৷ তাঁর এই ঘোষণায় জোর চর্চা শুরু হয়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে৷