জলপাইগুড়ি: ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে একদিকে যেমন অপ্রত্যাশিত ভালো ফল করেছিল বিজেপি, তেমনি পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূলের ফল অবাক করেছিল অনেককেই। উত্তরবঙ্গে একটিও আসন পায়নি তৃণমূল কংগ্রেস। সেই ক্ষোভ এখনো রয়ে গেছে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে। এখন আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে সেই অপূর্ণতা ঢাকতে চেষ্টা করছেন তিনি। এই কারণেই জলপাইগুড়িতে জনসভা করে উত্তরবঙ্গ বাসীর কাছে তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ার অনুরোধ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন তারা বিজেপিকে ভোট দেবেন না সেই বিষয়েও স্পষ্ট ধারণা ব্যক্ত করলেন তিনি।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আক্ষেপের সুরে উত্তর বঙ্গবাসীকে প্রশ্ন করেন, ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে একটিও আসন পাইনি তৃণমূল কংগ্রেস, কি অপরাধ ছিল তাদের যে একটিও আসন তৃণমূল পেল না? এই প্রসঙ্গে মমতা সকলকে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস এখান থেকে একটিও আসন পায়নি, কিন্তু আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গবাসীর সম্পূর্ণ আশীর্বাদ পেতে চান তিনি। এক্ষেত্রে তিনি বলেন, বিজেপি ক্ষমতায় এসে বাংলাকে গুজরাট বানাতে চায়, কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস এটা কখনোই হতে দেবে না। বিজেপি বাংলার মেরুদন্ড ভাঙতে চায়, কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস থাকতে তা কোনদিন হবে না। এই কারণেই প্রত্যেকের উচিত তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দেওয়া বলে দাবি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ প্রসঙ্গে জাতীয় সংগীত বদলের কথা উল্লেখ করেন মমতা। তিনি বলেন, এখন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা জাতীয় সংগীত বদল করতে এসেছে বিজেপি, সাহস থাকলে তা করে দেখাক! পুরুষের দরকার নেই, বাংলার মা বোনেরাই বিজেপিকে সবক শিখিয়ে দেবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। প্রসঙ্গত, বিজেপির বর্ষিয়ান নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা জাতীয় সংগীত অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, বর্তমানে যে জাতীয় সংগীত রয়েছে তার একটি শব্দ অনৈতিক, মানুষের মধ্যে দ্বিধা তৈরি করে। তাই সেটির বদল দরকার।
তিনি আরো বলেন, বিজেপি শুধু নতুন ধর্মের প্রবর্তন ঘটিয়েছে সব জায়গায়। সেই ধর্ম হল দাঙ্গা ধর্ম, কুৎসা ধর্ম। মানুষের সঙ্গে মানুষের বিবাদ সৃষ্টি করার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে বিজেপি। সবার সঙ্গে সবার ঝামেলা লাগিয়ে দিচ্ছে, সকলের সঙ্গে সকলের দূরত্ব করিয়ে দিচ্ছে। আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়িতে ও বিজেপি একই কাজ করেছে বলে দাবি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।