কাঁথি: একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে শাসকদলের বিরুদ্ধে বিরোধীদের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার শিক্ষক নিয়োগ। শিক্ষা মহলে নানা কারণে দীর্ঘ দিন ধরে যে অসন্তোষ দানা বেঁধেছে, তা ভোটের আগে চরম অস্বস্তিতে ফেলেছে শাসকদলকে। কিন্তু শিক্ষা মহলের এই ক্ষোভের আগুনকে এবার বিরোধীদের উদ্দেশ্যেই পাল্টা হাতিয়ার করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন একাধিক হেভিওয়েট নেতা। দলত্যাগী সেই সমস্ত নেতৃবৃন্দকেই ‘গদ্দার’, ‘মীরজাফর’ আর ‘বেইমান’ আখ্যা দিয়েছেন দলনেত্রী। তাঁরাই শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল, এদিন দলীয় জনসভা থেকে সাফ জানালেন তিনি। তাঁর কথায়, “শিক্ষক শিক্ষিকা যখন আমরা নিয়োগ করি, আমি সেখানে থাকি না। যাঁরা দুর্নীতি করেছে তাঁরা গদ্দারি করে পালিয়েও গেছে। কে কত নিয়েছে জিজ্ঞাসা করুন।” এখানেই শেষ নয়, নরেন্দ্র মোদীর “তৃণমূল চোর” মন্তব্যের পাল্টা হিসেবে তিনি আরো বলেন, “তোমার দলের গদ্দাররা চোরের বাবা।”
এদিনের জনসভায় প্রথম থেকেই বিজেপির বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি সুপ্রিমো নরেন্দ্র মোদীকে তিনি “ডাকাতের সর্দার” বলে উল্লেখ করেন। যাঁরা গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রেখে ভোটের মুখে দলকে বিপাকে ফেলেছে তাঁদের উদ্দেশ্যে তৃণমূল নেত্রীর বার্তা, “বিজেপির সাথে রাতে কানে কানে কথা বলা, দিনে চুমু খাওয়া লোকরা গেল না এল তাতে আমার কোনো যায় আসে না।”
নাম না করলেও এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায় একাধিক বার উঠে এসেছে শুভেন্দু অধিকারী আর শিশির অধিকারীর প্রসঙ্গ। রাজনীতি সচেতন মানুষ মাত্রেই সে ইঙ্গিত বুঝে নিতে অসুবিধা হয়না। তিনি বলেন, “এক সময় আমি নিজে হাতে ছবি এঁকে উপহার দিয়ে এসেছিলাম। আর আজ সেই গদ্দার, মীরজাফর বিশ্বাসঘাতকের দল বিজেপিকে হাত ধরে নিয়ে এসেছে।” উল্লেখ্য, শুভেন্দু অধিকারীর পর আজই অমিত শাহের সভায় গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছেন তাঁর বাবা তথা কাঁথির তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী।