কাঁথি: পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনীতির বাইরে বহুমুখী প্রতিভার কথা আজ আর অবিদিত নেই কারোরই। গান, কবিতা লেখা থেকে শুরু করে ছবি আঁকা, সব ক্ষেত্রেই সমান পারদর্শিতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, এই আনুষাঙ্গিক শিল্প প্রতিভা থেকে পাওয়া অর্থেই যে তাঁর দিন চলে যায় সে কথাই আরো একবার স্মরণ করিয়ে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
চাইলেই পেনশন আর বেতন নিয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হতে পারতেন তিনি, কিন্তু নিজেকে মুখ্যমন্ত্রী নয়, সাধারণ মানুষের মতোই একজন মনে করেন, এদিন দক্ষিণ কাঁথির জনসভা থেকে এমনটাই জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি বলেন, “আমি এক টাকাও মাইনে নিই না, সারাদিন চাকরের মতো কাজ করি। নিজেকে সাধারণ মানুষ মনে করি। চাকর বাকরও আমার কাছে সম্মানীয়।” চা খাওয়া হোক বা সার্কিট হাউসে থাকা, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কোথাও এক চিলতে সরকারি সুবিধা নেন না তিনি, এদিন জানিয়েছেন তাও। তাহলে কীভাবে সংসার চলে? নিজেই সেই উত্তর দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তিনি বলেন, “আমি বই লিখি, গান লিখি, ক্যাসিও বাজাই, ছবি আঁকি। নিজের নামে এক পয়সাও নিই না। বই আর গানের রয়্যালটি দিয়েই আমার চলে যায়।”
নিজের রোজগারের খতিয়ান দিতে গিয়ে এদিন নাম না করে আরো একবার দলত্যাগী দুর্নীতিবাজদের নিশানা করেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি বলেন, “আমি একা মানুষ, আমি কেন কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কে হাত সাফাই করে কোটি কোটি টাকা সরাবো?কে খাবে?” পরোক্ষে যে দলত্যাগ করে বিজেপিতে যাওয়া নেতাদেরকেই কটাক্ষ করেছেন তিনি তা বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না।
সারাদিন চাকরের মতো খেটে মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু সব কাজই তিনি করে দেবেন, এদিন আশ্বাস দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে প্রথম দফা নির্বাচনের আর মাত্র দিন ছয়েক বাকি। এমতাবস্থায় তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরতে মরিয়া শাসকদল। দিনের পর দিন পায়ে চোট নিয়ে হুইলচেয়ারে বসেই তাই জেলায় জেলায় প্রচার চালাচ্ছেন দলনেত্রী। নীল বাড়ি দখলের এই লড়াইয়ে শেষ হাসি তিনি হাসতে পারেন কিনা সেটাই এখন দেখার।