কলকাতা: গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে। করোনা আবহের মধ্যে শুরু হতে চলেছে এবারের মেলা। আগামী ৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে চলেছে গঙ্গাসাগর মেলা। এই মেলা চলবে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। কোভিড পরিস্থিতির কথা ভেবে অন্যান্য বারের মতো এবারের গঙ্গাসাগর মেলায় ভিড় হবে ধরে নিয়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষার পাশাপাশি পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার ওপর বিশেষ জোর দিয়েছে রাজ্য ও জেলা প্রশাসন৷ করোনা সংক্রমনের মোকাবিলার জন্য রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে বিস্তারিত নির্দেশিকা দিয়ে জানানো হয়েছে৷ সেই মতো জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেলা শুরুর যাবতীয় পরিকল্পনা নিয়েছে। বাফার জোনে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে, প্রস্তুতি থাকলেও এবার খুব সম্ভাবত সাগরে যাচ্ছে না মুখ্যমন্ত্রীর৷ দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সফর থাকলে সাগর মেলায় এবার তাঁকে দেখা নাও যেতে পারে৷
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, মেলায় ঢোকার দশটি পয়েন্টে দিনরাত থাকবে করোনা রাপিড টেস্টের ব্যবস্থা। প্রত্যেক পয়েন্টে থাকবে কোভিড ম্যানেজমেন্ট টাস্কফোর্স। খোলা হয়েছে ১১টি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার ও ৮টি সেফ হোম। কোয়ারান্টাইন সেন্টারে থাকছে ৬৪৫টি এবং সেফ হোমে থাকছে ৬১৫ টি বেড। এছাড়া প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য থাকছে ৩৮টি বুথ। সেখানে মোট বেড থাকছে ৬৫৮টি। গতবারের তুলনায় এবার চিকিৎসকের সংখ্যা দ্বিগুণ ও নার্সের সংখ্যা তিনগুণ বেশি করা হয়েছে। মেলার অস্থায়ী হাসপাতাল থেকে কোনও রোগীকে বদলি করার প্রয়োজন হলে তাদের কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি, ডায়মন্ড হারবার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, এম আর বাঙ্গুর ও বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে। তার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মৃতদেহ সৎকারের জন্য ৬টি করে কবরস্থান ও চুল্লির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এবারের সাগর মেলার মাঠ পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার জন্য সাগর বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ থেকে ২৫০ জন পুরুষ ও মহিলা ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা হয়েছে। মেলা শুরুর আগে থেকেই সেই কাজ শুরু করে দিয়েছেে সাফাই কর্মীরা। আবর্জনা সাফাইয়ের জন্য থাকছে ২৮টি ই-রিক্সা। আবর্জনা রাখার জন্য থাকবে ২ হাজারের বেশি ভ্যাট। মজুত আবর্জনার জন্য ২ টি অস্থায়ী কঠিন তরল বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে৷
জেলাশাসক পি উলগানাথন জানিয়েছেন, এবারের মেলায় স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও দূরত্ব বিধির দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অস্থায়ী হাসপাতাল, রাপিড টেস্টের ব্যবস্থা থাকছে। এবারের মেলায় বেশি সংখ্যক চিকিৎসক-নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীদের নিয়োগ করা হয়েছে। শেষ মুহূর্তে সমস্ত বিষয়টি তদারকি করছেন সাগর বকখালি উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা। তিনি জানান, সাগর মেলার আজ যা কিছু উন্নয়ন হয়েছে তার সমস্ত কৃতিত্ব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি এই মেলাকে আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছে দিয়েছেন৷ তবে, এখনও পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর সাগর মেলায় যাওয়ার কোনও সূচি ঘোষণা হয়নি৷ এখনও পর্যন্ত যা ঠিক আছে, তাতে এবার সাগরে যাচ্ছেন না মুখ্যমন্ত্রী৷ -ফাইল ছবি