জলপাইগুড়ি: আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে জেলা সফর শুরু করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন জলপাইগুড়িতে জনসভা করে শুরু থেকেই কেন্দ্রের ভারতীয় জনতা পার্টি সরকারকে আক্রমণ করলেন তিনি। আক্রমণের মূল কারণ ছিল পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ‘চাকরির প্রতিশ্রুতি কার্ড’ প্রসঙ্গ। বিধানসভা নির্বাচনের আগে বঙ্গবাসীকে ৭৫ লক্ষ চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বঙ্গ বিজেপি ব্রিগেড। অর্থাৎ বলা হয়েছে, নির্বাচনে জিতলে পশ্চিমবঙ্গে ৭৫ লক্ষ চাকরি হবে। বিজেপির এই প্রতিশ্রুতির প্রসঙ্গেই আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্ট বললেন, এসব প্রতিশ্রুতি মানেই প্রতারণা।
তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ক্ষমতায় আসার পর প্রথমবার বিজেপি বলেছিল বছরে ২ কোটি চাকরি দেবে। আজ পর্যন্ত সেই চাকরি কেউ পায়নি। এখন আবার বিধানসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে ৭৫ লক্ষ চাকরির। এইসব প্রতিশ্রুতি বলে কিছু হয়না, প্রতিশ্রুতি মানেই প্রতারণা! মমতা দাবি করেছেন, এখন নির্বাচনের আগে বিজেপি বলছে ঘরে ঘরে গিয়ে চাকরির জন্য ফর্ম ফিলাপ করাবে। কিন্তু আদতে দেখা যাবে নির্বাচনের পরেই সবাই হাওয়া হয়ে গেছে। যে সরকার বছরে ২ কোটি চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রক্ষা করতে পারে না, সেই বিজেপি দল এখন আবার পশ্চিমবঙ্গে এত চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। এটা পুরোটাই ভাঁওতাবাজি।
এর পাশাপাশি সিএএ এবং এনআরসি নিয়ে বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করেন তিনি। বলেন, বিজেপি আগে বলছিল সিএএ হবে, এনআরসি এবং এনপিআর হবে। এখন বলছে এনআরসি হবে না এনপিআর হবে। দুটোর মধ্যে কোন তফাৎ নেই। আসলে বিজেপি ফের একবার মানুষকে বোকা বানিয়ে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করছে। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, উত্তরবঙ্গের সমস্ত উদ্বাস্তু শিবিরে রেকোগ্নিশন হয়ে গেছে। এখানে কাউকে বিজেপি তাড়াতে পারবে না। আসামের অবস্থা সবাই জানেন, সেখানে ১৯ লক্ষ বাঙালিকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তারা বুঝতে পেরেছে বিজেপি কতটা প্রতারণা করেছে তাদের সঙ্গে। উত্তরবঙ্গ বাসিকেও এ ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে বলে বার্তা দেন মমতা।
প্রসঙ্গত, ‘চাকরি প্রতিশ্রুতি কার্ড’ নামক একটি প্রচার কর্মসূচি তৈরি করেছে রাজ্য বিজেপি। বিজেপির দাবি, ‘চাকরি প্রতিশ্রুতি কার্ড’ নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ৭৫ লক্ষ বেকার যুবকদের কাছে পৌঁছে যাবেন বিজেপি কর্মীরা। ওই কার্ডে চাকরি প্রার্থীদের নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও পছন্দের কাজ নথিভুক্ত করা হবে। রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে আগামী ৫ বছরে ওই যুবকদের চাকরি দেওয়া হবে।