আরও বাড়ছে সরকারি ছুটি! মতুয়া গড়ে ফের কল্পতরু মমতা, বহু দাবিতে মান্যতা

আরও বাড়ছে সরকারি ছুটি! মতুয়া গড়ে ফের কল্পতরু মমতা, বহু দাবিতে মান্যতা

78482d34fcabd1e1ec9d9476c2199608

বনগাঁ: মতুয়াদের গড়ে সভা থেকে হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুরের অনুগামীদের দাবিগুলি মেনে নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুরের জীবনী পাঠ্যপুস্তকে ঠাঁই দেওয়া এবং জন্মতিথিতে ছুটি দেওয়ার ঘোষণা করে মতুয়াদের মন জয়ের চেষ্টায় বিন্দুমাত্র কসুর করলেন না তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্গাপুর থেকে সরাসরি ঠাকুরনগরে চলে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে ছবি দেখিয়ে হরিচাঁদ গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ তৈরির ঘোষণা করেন তিনি। পাশাপাশি মতুয়া সম্প্রদায়ের জন্য একগুচ্ছ ঘোষণা করেন৷

দীর্ঘদিন ধরে মতুয়া উন্নয়ন পর্ষদ তৈরির দাবি তুলে আসছে মতুয়া সম্প্রদায়। এদিনের সভা থেকে মমতা ঘোষণা করেন, “বাউড়ি, নমঃশুদ্রদের পাশাপাশি মতুয়া উন্নয়ন পর্ষদ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে ইতিমধ্যেই ১০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। কমিটির সদস্যদের নাম দেওয়া হলে আমি কাজ শুরু করতে পারব। এটা আপনাদের প্রথম দাবি ছিল।’’ মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রাণপুরুষ হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথিতে ছুটি ঘোষণার দাবি তোলা হয়েছে। সেই দাবি মেনে নিয়ে এদিন তিনি জানান, পঞ্চানন বর্মা, বীরসা মুণ্ডার মতো হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথিতেও ছুটি ঘোষণা করবে রাজ্য সরকার। বছরের কোনদিনটিতে জন্মতিথি পড়েছে, ৬ মাস আগে বাৎসরিক ক্যালেন্ডার তৈরির সময় তা জানিয়ে দিতে বলেন মমতা৷ ২০১৮ সালে মতুয়াদের দাবি মেনে হরিচাঁদ গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির শিলান্যাস হলেও, তার কাজ খুব একটা এগোয়নি। এদিন সভামঞ্চ থেকে ছবি দেখিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের জানান, ‘‘আমরা কলেজ তৈরি করে দিয়েছি, সেটা চালু হয়ে গিয়েছে। আর হরিচাঁদ গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব আমরা তা পূরণ করে দেব।”

রাজ্য সরকারের পাঠ্যপুস্তকে মতুয়া প্রাণপুরুষ হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুরের আত্মজীবনী অন্তর্ভুক্ত করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনের সভা থেকে, সেই দাবি পূরণ করা হয়েছে বলে জানান তৃণমূল সুপ্রিমো৷ হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকপুরের আত্মজীবনী পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং আরও কিছু থাকলে তা জানালে যোগ করে দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা করেন তিনি। মতুয়াদের দাবির মধ্যে আরেকটি ছিল তপশিলি জাতি, উপজাতি ও অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির শংসাপত্র পাওয়ার পদ্ধতি সরলীকরণ করার জন্য দাবি জানিয়ে ছিলেন মতুয়ারা। সেই দাবি মেনে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘পরিবারের কারও শংসাপত্র থাকলে ১০ দিনের মধ্যে নতুন সদস্য শংসাপত্র পাবেন।’’

২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে মোট ভোটের ৪৮.৮৫ শতাংশ বা ৬,৮৭, ৬২২ ভোট পেয়ে জয়ী হন বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর, অন্যদিকে দ্বিতীয়স্থানে থাকা তৃণমূল কংগ্রেস ৪০.৯২ শতাংশ বা ৫,৭৬,০২৮  ভোট পায়। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ভোটের হার বেড়েছে ২৪.৬৮ শতাংশ, অন্যদিকে ২.৩৫ শতাংশ ভোট কমেছে তৃণমূলের। তার যে একটা বড় কারণ, মতুয়া সম্প্রদায়ের মুখ ফিরিয়ে নেওয়া, তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। আর সেই কারণেই বিধানসভা ভোটের আগে মতুয়া ভোটকে ফের ঘাসফুলে ফেরাতে মমতার এই উদ্যোগ আদৌও কাজে আসে কি না, তার জবাব দেবে সময়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *