কলকাতা: ভোটমুখী বাংলায় পরপর দুটি মেগা রোববারের সাক্ষী থেকেছে কলকাতার মানুষ। বামেদের ব্রিগেডের পরেই ছিল গেরুয়া শিবিরের ব্রিগেড সমাবেশ, যেখানে আবার হাজির হয়েছিলেন খোদ নরেন্দ্র মোদী। নিজের মুখেই তিনি স্বীকার করেছেন এত বড় সমাবেশ এর আগে তিনি দেখেননি। কিন্তু রাজনৈতিক এই উত্তেজনার ঠেলায় পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব মনে রাখল না কোনো দলই।
কলকাতার প্রাণকেন্দ্রে যে সবুজ ময়দান ব্যস্ত শহরবাসীর দু ফোঁটা আড্ডার সহায়, পর পর দুটো ব্রিগেড সমাবেশের পর আর তার দিকে চোখ মেলে তাকানোই যাচ্ছে না। মরা ঘাস আর ধুলোয় জর্জরিত ময়দান যেন ধুঁকছে। বিজেপির ব্রিগেডের পরের দিন সকালে তো মাঠের এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে আরেক প্রান্ত দেখারও জো ছিল না। ঘাস সব মরে যাওয়াতেই ধুলো ওড়ার পরিমাণ বেড়ে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রাণের ময়দানের এহেন অবস্থা মোটেই ভালো দেখছে না শহরবাসী, বিশেষত যাঁরা প্রায়ই আড্ডা বসান ময়দানের সবুজে, মন খারাপ তাঁদের সকলেরই। ময়দানের দূষণ নিয়ে চিন্তিত পরিবেশবিদরাও। সূত্রের খবর, সহ্য সীমার অতিরিক্ত সূক্ষ্ম ও অতিসূক্ষ্ম ধূলিকণা ভাসছে ময়দানের বাতাসে। শ্বাসযন্ত্রে ও ফুসফুসে সরাসরি ঢুকে গিয়ে স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে এই সমস্ত কণা। পরিবেশবিদদের মতে, এর ফলে ছড়াতে পারে সংক্রমণ। বিশেষত, অতিমারী পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এ ব্যাপারে উদ্বেগ আরো বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, গত দুটি রবিবারে ময়দানে জমায়েত হয়েছিলেন গোটা রাজ্যের মানুষ। অর্থাৎ পায়ে পায়ে সারা রাজ্যের ধুলোই এসে পড়েছে ব্রিগেড প্রান্তরে। শুকনো আবহাওয়ায় দেদার উড়ছে সেই ধুলো, যা শহরবাসীর জন্য খুব একটা স্বস্তির কথা নয়। ব্রিগেড তো প্রতিবছরই হয়, ঠিক কী কারণে এবারে এমন উদ্বেগ? বিশেষজ্ঞদের মতে, দুটি ব্রিগেডের মাঝে অন্তত এক মাসের ব্যবধান থাকলেও মরা ঘাসের জায়গায় গজিয়ে ওঠে নতুন ঘাস, যা বাতাসের ধুলো টেনে নেয়। কিন্তু এবারে সেই সুযোগ হয়নি। ফলে রাজনৈতিক কচকচানিতে ময়দানের অবস্থা এখন শোচনীয়।