Secondary Exams
কলকাতা: মাধ্যমিক পরীক্ষা নির্বিঘ্নে শেষ করতে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখছে না মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। যে কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে পর্ষদের তরফে। থাকছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আর পরীক্ষা হলে ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে কোনও অসদুপায় অবলম্বন করতে না পারে, সামান্যতম বিশৃঙ্খলা যাতে না ঘটে, তা রুখতে প্রত্যেকটি পরীক্ষার দিন সকাল আটটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত পরীক্ষা হলে সিসিটিভি ক্যামেরা টানা চালু থাকবে। আর সেই ন’ঘণ্টার সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষিত থাকবে।
পরীক্ষার ফল প্রকাশ যতদিন না হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত সেই ফুটেজ নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে দেওয়া থাকবে। পর্ষদ সূত্রে শুক্রবার এমন খবরই পাওয়া গিয়েছে। সেই নির্দেশ প্রত্যেকটি ভেন্যু সুপারভাইজারের কাছে এদিন পৌঁছে দিয়েছে পর্ষদ। পর্ষদের স্পষ্ট বক্তব্য, পরীক্ষা কেন্দ্রে যাতে কোনও রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয়, তা নিশ্চিত করতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি মাধ্যমিকে প্রশ্ন ফাঁস রুখতে আগেই কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছিল পর্ষদ। উল্লেখ্য সমস্ত পরীক্ষা কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা রাখা থাকবে বলে গতবারই জানিয়েছিল পর্ষদ। কিন্তু গতবার সেটা সম্ভব হয়নি। তবে এবার তা করতে বদ্ধপরিকর পর্ষদ কর্তারা।
এদিকে প্রশ্ন ফাঁস নিয়েও নয়া পদক্ষেপ গ্রহণ করছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সমস্ত বিষয়ের পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রে ব্যবহার করা হবে বিশেষ কোড। তাতেই প্রশ্ন ফাঁস রোখা যাবে বলে নিশ্চিত পর্ষদ। অতীতে মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় একাধিকবার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্যজুড়ে। তবে এবার মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য এখন থেকেই পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এমন ব্যবস্থা করেছে যেখানে প্রশ্নপত্রের ছবি পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে বেরোলেই সেই প্রশ্নপত্র কোন পরীক্ষার্থীর তা জানা যাবে।
জানা গিয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের যে প্রশ্নপত্র দেওয়া হবে তার প্রত্যেকটিতে একটি করে ‘স্বতন্ত্র কোড’ থাকবে। তাই প্রশ্নপত্রের ছবি বাইরে আসলেই বোঝা যাবে সেটি কোন পরীক্ষার্থীকে দেওয়া হয়েছিল। এভাবেই প্রশ্ন ফাঁস রুখতে চাইছে পর্ষদ। পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি প্রশ্নপত্রে একটি করে ইউনিক সিরিয়াল নম্বর করে দেওয়া থাকবে। পরীক্ষার সময় একজন পরীক্ষার্থী যে প্রশ্নপত্র পাবে সেই প্রশ্নপত্রের ইউনিক কোডটি তার উত্তরপত্রে ও অ্যাটেন্ডেন্স শিটে লিখে দিতে হবে। এরপর যদি কোনও প্রশ্নপত্র বাইরে বেরিয়ে আসে তখন কোডটি দেখলেই বোঝা যাবে কোন জায়গা থেকে প্রশ্নের ছবি বেরিয়েছে এবং সেই প্রশ্নপত্রটি কার।
শুধু তাই নয়, প্রত্যেকটি প্রশ্নপত্রে এমন ভাবে কোড দেওয়া থাকবে যাতে কোনও ভাবে সেটি বাইরে আসলেই বোঝা যাবে সেটি কোন জেলার। এরপর সহজেই সেই প্রশ্নপত্র কোন পরীক্ষার্থীকে দেওয়া হয়েছিল তা নিজস্ব সিস্টেম অনুযায়ী খুঁজে বের করতে পারবে পর্ষদ। উল্লেখ্য ২ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাধ্যমিক পরীক্ষা হবে। প্রায় ১২ লক্ষ পড়ুয়া এবার মাধ্যমিক দেবে। আর সেই পরীক্ষা ঘিরে নজিরবিহীন নিরাপত্তার ব্যবস্থা করছে পর্ষদ। সেক্ষেত্রে পর্ষদের অন্যতম হাতিয়ার সিসিটিভি। সেই ক্যামেরা নজরদারির মাধ্যমেই পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে চান পর্ষদ কর্তারা।