নয়াদিল্লি: করোনা পরবর্তী সময়ে দেশের নুইয়ে পড়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা করাই ছিল কেন্দ্র সরকারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু যত দিন এগিয়েছে পাল্লা দিয়ে ততই বেড়েছে রান্নার গ্যাসের দাম। পেট্রোল ডিজেলের মতো জ্বালানি তেলের দামও ক্রমেই উর্দ্ধমুখী। এমতাবস্থায় মূল্যবৃদ্ধির চাপে পকেটে টান পড়ছে সাধারণ মধ্যবিত্তের।
গত সাত বছরে গৃহস্থ ঘরের রান্নার গ্যাসের দাম বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ, এমনই তথ্য উঠে এসেছে সাম্প্রতিক সমীক্ষায়। মূল্যবৃদ্ধির এই উর্দ্ধমুখী গ্রাফের পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে কমেছে এলপিজি ভর্তুকি, এখন যা প্রায় উঠেই গেছে। এখানেই শেষ নয়, গত কয়েক বছরে পেট্রোল আর ডিজেল থেকে সরকারের গৃহীত করের পরিমাণ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। বর্তমানে জ্বালানি তেলের যে দামে নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ মানুষের, তার অন্যতম কারণ গত কয়েক বছরে সরকার প্রযুক্ত করের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে সাড়ে চার গুণ, সংসদের নিম্নকক্ষে খোদ কেন্দ্রীয় তৈল মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান এই স্বীকারোক্তি করেছেন।
এলপিজি এবং জ্বালানি তেলের ক্রমবর্ধমান দামের বিষয়ে একগুচ্ছ প্রশ্ন করা হয়েছিল কেন্দ্রীয় তৈল মন্ত্রীকে। তারই উত্তর দিতে গিয়ে এদিন তিনি জানান, ২০১৪ সালের ১ মার্চ দেশে রান্নার গ্যাসের দাম ছিল ৪১০.৫০ টাকা। বর্তমানে তার দাম ৮১৯ টাকা হয়েছে। গত ৩২ দিনে এক ধাক্কায় এলপিজি সিলিন্ডারের দাম বেড়েছে প্রায় ১২৫ টাকা। গৃহস্থের কপালে চিন্তার ভাঁজ গাঢ় করে গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে পর পর চার দফায় এই দাম বাড়ানো হয়েছে।
পেট্রোল ডিজেলের থেকে সরকারের কর সংগ্রহের দিকে যদি নজর রাখা যায় তাহলে দেখা যাবে জ্বালানি তেল থেকে ২০১৩ সালে মোট ৫২৫৩৭ কোটি টাকা কর বাবদ আয় হয়েছিল কেন্দ্রের, কিন্তু ২০২০-২১ সালের মধ্যে সেই আয় বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। বর্তমানে প্রায় ৩ লক্ষ কোটি টাকা জ্বালানি তেল থেকে আয় করে সরকার। বলা বাহুল্য, খোদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই স্বীকারোক্তিতে অস্বস্তি বেড়েছে কেন্দ্রের। ইতিমধ্যে রান্নার গ্যাস ও জ্বালানি তেলের ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধির জন্য দিকে দিকে শুরু হয়ে গেছে কেন্দ্র বিরোধী অসন্তোষ।