কর্ণাটকের কুর্সি দখল করতে দীর্ঘদিন ধরেই লড়াই শুরু করেছিল বিজেপি ও কংগ্রেস। একদিকে যেমন ভোটের প্রচারে প্রায় ২০টি জনসভা করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তেমনই, কর্ণাটকের জমি আঁকড়ে প্রচার চালিয়েছেন সোনিয়া পুত্র। যদিও অস্তিত্ব রক্ষার পরীক্ষায় শেষ হাসি হাসলেন রাহুল গান্ধীই। নির্বাচনে জয়ের জন্য কর্ণাটকবাসীকে ধন্যবাদ জানান রাহুল। সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, এই জয় কর্পোরেট পাওয়ারকে হারিয়ে আম আদমির জয়।
গত বছর দেশ জুড়ে সাড়া ফেলে দিয়েছিল রাহুলের ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রা। দক্ষিণ থেকে উত্তর ভারতে, কয়েকমাস ধরে নেতা-কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে পথযাত্রা করেন রাহুল গান্ধী। যে পদযাত্রায় যোগ দিয়েছিলেন খেলা থেকে শুরু করে বিনোদন দুনিয়ার তারকারা। রাহুল গান্ধীর সেই কর্মসূচির পর এই প্রথম দেশের কোনও বড় রাজ্যে ভোট হল। তার পরেই হাত শিবিরের এই সাফল্য! যা বাড়তি অক্সিজেন যুগিয়েছে দলের নিচু তলার নেতা-কর্মীদের মধ্যে। এদিন জয়ের ইঙ্গিত মিলতেই রাহুলের ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রার একটি পুরনো ভিডিয়ো পোস্ট করে রাহুল গান্ধীকে দলের তরফে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
গতবছর ২১ দিন ধরে ভারত জোড়ো যাত্রায় এই রাজ্য দিয়ে হেঁটেছিলেন রাহুল। কর্ণাটকে প্রচারে গিয়েও মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়েছিলেন। কখনও বেঙ্গালুরুতে বাসে চড়েছেন, কখনও বাইকের পিছনে চেপে ঘুরেছেন। মানুষের সঙ্গে গিয়ে কথা বলেছেন। গরীব মানুষের সেই ভালবাসার শক্তি এই জয় এনে দিয়েছে বলে এদিন দাবি করেন রাহুল গান্ধী। জয়ের কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বলেন, ‘কর্ণাটকে হিংসার বাজার বন্ধ হয়েছে, ভালোবাসার দোকান খুলেছে।’
২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচন বিজেপি এবং কংগ্রেস দুই দলের কাছেই ছিল কার্যত ‘অ্যাসিড-টেস্ট’। একদিকে বিজেপির কাছে পরীক্ষা ছিল কর্নাটক জয়ের মাধ্যমে লোকসভা ভোটের আগে দাক্ষিণাত্যে ক্ষমতা বিস্তার করা। অন্যদিকে, একের পর এক নির্বাচনে ভরাডুবির পর কংগ্রেসের কাছে এই লড়াই ছিল অস্তিত্ব রক্ষার। আবার, রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ হওয়ার পর এটাই প্রথম বিধানসভা নির্বাচন ছিল কোনও রাজ্যে… কাজেই কর্ণাটকের কুর্সি দখলের লড়াইটা অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং ছিল হাত শিবিরের কাছে।
যদিও সব চ্যালেঞ্জের জবাব দিয়ে কর্ণাটকে দাপুটে জয় পেয়েছে কংগ্রেস। লোকসভা ভোটের বছর খানেক আগে দক্ষিণের রাজ্যে এই জয় যে কংগ্রেসকে নতুন করে অক্সিজেন যোগাল, সেটা নতুন করে আর বলার অপেক্ষা রাখে না।