lok sabha
নিজস্ব প্রতিনিধি: সামনেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগে চাল, গম-সহ বিভিন্ন ফসলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায় নরেন্দ্র মোদি সরকার। ঘটনা হল আশি কোটি মানুষকে বিনা পয়সায় কেন্দ্র চাল দিলেও তার বাইরে থাকা বিপুল সংখ্যক মানুষকে চাল কিনতে হয়। কিন্তু গত দু’বছর ধরে চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গিয়েছে বলে বহুদিন ধরেই অভিযোগ আসতে শুরু করেছে বিভিন্ন রাজ্য থেকে। সেক্ষেত্রে চালের দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে নির্বাচনে তার প্রভাব পড়তে পারে বলে কেন্দ্র মনে করছে। আর সেই সূত্রেই এবার দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে খোলা বাজার ও রেশন দোকানের মাধ্যমে ভর্তুকি দিয়ে চাল-সহ বেশ কিছু ফসল বিক্রির সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় সরকার।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীগোষ্ঠী বৈঠকে বসে বিষয়টি নিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৈঠকে ঠিক হয়েছে ফসলের দাম কমিয়ে তা সাধারণ মানুষের নাগালে নিয়ে আসতে হবে। তার জন্য ভর্তুকি দেওয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে যাতে দেশের সমস্ত চালকল মালিক ও সরবরাহকারী সংগঠন রয়েছে তাঁরা সহযোগিতা করেন সেই আবেদন জানিয়েছে কেন্দ্র।
বিভিন্ন সমীক্ষার মাধ্যমে যে পরিসংখ্যান উঠে এসেছে তা থেকে জানা গিয়েছে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত চালের দাম কমবে না। এমনিতেই গত দেড় বছরে চালের দাম ১২ শতাংশ বেড়েছে। একই ভাবে দাম বেড়েছে অন্যান্য কিছু ফসলের। তাই কোনও ভাবেই মূল্যবৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের কাছে সরাসরি যাতে কম দামে চাল, আটা ইত্যাদি বিক্রি করা হয় তাহলে অনেকটাই সুরাহা পাবেন সবাই। সেই সূত্রে ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া-সহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থা যাতে সরাসরি সাধারণ মানুষের হাতে কম দামে খাদ্যশস্য পৌঁছে দেয় সেই আবেদন করা হয়েছে কেন্দ্রের তরফে।
রীতিমতো ব্র্যান্ডিং করে চাল, গম ইত্যাদি তুলে দেওয়া হবে সাধারণ মানুষের হাতে। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ভারত চাল’, ‘ভারত আটা’, ‘ভারত ডাল’ ইত্যাদি। কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সূত্রে খবর, সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা খোলা বাজারে সংস্থাগুলিকে ২৫ টাকা কেজি দলে চাল বিক্রি করবে। রেশন ডিলাররা তা সংগ্রহ করে বিক্রি করবেন কেজি প্রতি চার টাকা বেশি মূল্যে। সেই সঙ্গে কেন্দ্র জানিয়েছে আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে চাল, গম ইত্যাদি ফসল এফসিআইকে বিক্রি করে ফেলতে হবে। সেই সঙ্গে কেন্দ্র জানিয়েছে সংস্থাগুলি কতটা ফসল মজুত করতে পারবে তার জন্য নির্দিষ্ট কোনও বাধা নেই। কেন্দ্র স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে পর্যাপ্ত শস্য মজুত করে তা বিক্রি করতে পারবে সংস্থাগুলি। ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে রেশন ডিলারদের কাছে।
এতে দেশবাসীর কাছে সুস্পষ্ট বার্তা দেওয়া যাবে বলে কেন্দ্র মনে করছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে কেন্দ্রীয় সরকারের মানবিক দিক সবার সামনে নতুন করে উঠে আসবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। আর এই পদক্ষেপ যে ভোটের লক্ষ্যেই করা হচ্ছে তা নিয়ে নিশ্চিত রাজনৈতিক মহলের একাংশ। এর প্রভাব ভোটবাক্সে কতটা পড়ে সেটাই দেখার।