কলকাতা: রাজ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষা বাতিল হয়ে যাবে, নাকি স্থগিত করা হবে তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীয় হয়নি৷ সিদ্ধান্ত নেবেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এমতাবস্থায় মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির পক্ষ থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ে তাদের অভিমত ব্যক্ত করে চিঠি পাঠানো হল৷ করোনা মোকাবিলায় শিক্ষক, শিক্ষানুরাগীদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ৷ প্রয়োজনে ইচ্ছুকদের সাহায্য নিক সরকার, আর্জি শিক্ষক সংগঠনের৷
আরও পড়ুন- মাধ্যমিক পরীক্ষার ভবিষ্যৎ কী? রিপোর্ট গেল মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে!
মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির তরফে বলা হয়েছে, আমাদের দেশের দুটি সর্বভারতীয় বোর্ড দশম শ্রেণির বোর্ড বাতিল করে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ রূপায়নের পথ প্রস্তুত করেছে৷ আমাদের রাজ্যের বোর্ডও একই পথ অনুসরণ করতে শিক্ষা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়বে৷ সেইসঙ্গে ছাত্রছাত্রী অভিভাবক এবং শিক্ষককুল এটাই চান যে, জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা থেকেই যেন এই রকম অনিশ্চয়তার মধ্যে ছাত্রছাত্রীদের বাকি জীবন কাটাতে না হয়৷
রাজ্যের বর্তমান করোনা আবহে চলতি বছরের প্রস্তাবিত মাধ্যমিক পরীক্ষার ভবিষ্যৎ কী হবে তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ রাজ্য সরকারের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠিয়েছে। পরীক্ষার ভবিষ্যৎ নিয়ে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তার জেরে শিক্ষাসচিব মণীশ জৈন গতকাল মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও টেলিফোনে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর পর্ষদের তরফে পরীক্ষার প্রস্তুতি সম্পর্কে বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরে পাঠানো হয়৷ পরীক্ষা না হলে কী ভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের বিকল্প পদ্ধতিতে নম্বর দেওয়া হবে রিপোর্টে সেই বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷ সব দিক খতিয়ে দেখে মুখ্যমন্ত্রী এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বলে পর্ষদের এক আধিকারিক জানিয়েছেন। উল্লেখ্য সূচি অনুযায়ী আগামী পয়লা জুন থেকে রাজ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। এই বছর প্রায় ১৩ লক্ষ ছাত্রছাত্রী এই পরীক্ষায় বসবেন।
আরও পড়ুন- দশম শ্রেণির পরীক্ষা নিয়ে স্কুলগুলিকে নয়া নির্দেশিকা সিবিএসই বোর্ডের
অন্যদিকে, শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের পক্ষ থেকে রাজ্য সম্পাদক কিংকর অধিকারী জানান, রাজ্যের সমস্ত শিক্ষক, শিক্ষানুরাগী ব্যক্তির উদ্দেশে বলা হয়েছে, অতিমারীর মতো এই সংকটজনক পরিস্থিতিতে এককভাবে নিজেদের রক্ষা নয়, প্রত্যেককে প্রত্যেকের পাশে দাঁড়াতে হবে। সবাই যেন তাঁর সাধ্যমত কভিড বিধি মেনে অসহায় মানুষ এবং করোনা আক্রান্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ায়। চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ক্লাব, অডিটোরিয়াম বা বিভিন্ন হল ঘরগুলিকে প্রয়োজনে ব্যবহার করার দাবিও জানানো হয়েছে। সংগঠনের দাবি, সরকারের তরফে সেখানে ইচ্ছুক শিক্ষক, শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের সাহায্যের জন্য আবেদন জানানো হোক। তাঁদের আশা, অনেকেই এই সংকটজনক অবস্থায় মানবিক আহ্বানে সাড়া দেবেন। সংগঠনের তরফে আরও বলা হয়, রাজ্যের বহু শিক্ষক এবং শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি নিজে অথবা সমষ্টিগতভাবে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমাদের বিশ্বাস এর মধ্য দিয়েই আমরা এইরকম একটি কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারবো।