কলকাতা: মনে হচ্ছে, কালীপুজো এবং ভাইফোঁটার পরেও বাংলায় উৎসব মহল চলছে। কারণ বিগত কিছুদিনে লোকাল ট্রেনে ভিড় তুলনায় অনেক কম ছিল, এখন রেল কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছে, দীপাবলীর পরেও লোকাল ট্রেনে খুব একটা ভিড় হচ্ছে না। এতে কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলেছে। এই ভাবেই যদি আগামী কিছুদিন ধরে ভিড় নিয়ন্ত্রণ হতে থাকে, তাহলে বাংলায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের গ্রাফ যে অনেকটাই কমে যাবে, তাতে কোন সন্দেহ নেই।
পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়েছে, নিত্যযাত্রীদের আবেদন মাথায় রেখেই বেশি সংখ্যক ট্রেন চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সেক্ষেত্রে অফিস টাইমে প্রায় ১০০ শতাংশ ট্রেন চালাতে উদ্যোগ নেয় রেল। আশা করা হয়েছিল, বেশি সংখ্যক ট্রেন চালানোর ফলে ভিড় স্বাভাবিকভাবে নিয়ন্ত্রিত হবে। কিন্তু বাস্তবের বিষয়টা একেবারেই মেলেনি। ট্রেনের সংখ্যা বাড়লেও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছিল না। রেল কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল, তাদের পক্ষে নিত্যযাত্রীদের ভিড় কোনভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। কিন্তু উৎসব মরসুমে ভিড় বেশি হবে এমনটা অনুমান করার পরে দেখা গিয়েছে, কালীপুজো এবং ভাইফোঁটার পরেও তেমন ভিড় হচ্ছে না লোকাল ট্রেনে। এমনকি যেসব নিত্যযাত্রীদের স্টেশনে এবং ট্রেনে দেখা যাচ্ছে, তাদের বেশিরভাগই মাস্ক পড়েছেন, যথাসম্ভব সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলছেন। এই খবরে সাময়িকভাবে স্বস্তি ফিরেছে বঙ্গবাসীর।
গত ১১ নভেম্বর থেকে দীর্ঘ সাত মাস পর আবার বাংলায় রেল চলাচল শুরু হয়েছিল। প্রাথমিক পর্যায়ে মনে করা হচ্ছিল, লোকাল ট্রেন শুরু হওয়ার পরে বাংলায় হয়তো করোনাভাইরাসের সংক্রমণের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হবে। তবে আপাতত যে ধীরে নিয়ন্ত্রণের চিত্র ধরা পড়েছে, তাতে আশা করাই যায়, হয়তো আশঙ্কাজনক অবস্থা হবে না বাংলার। যদিও ট্রেন যাত্রীদের ফলে বাংলার করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধি পায় কিনা তা জানতে হলে এখনো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে বিশেষজ্ঞদের অনুমান, লোকাল ট্রেন চালু হওয়ার পরেও যদি পশ্চিমবঙ্গের করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হার নিম্নমুখী হয়, তাহলে খুব শীঘ্রই হয়তো বাংলা করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জয়ী হবে। এর আগে দুর্গাপূজা উৎসবের সময়ে অত্যাধিক ভিড় আশঙ্কা করা হয়েছিল। যদিও কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের পরে অনেকটাই কম হয়েছে দুর্গাপুজোর ভিড়। একইভাবে আদালতের নির্দেশে কালিপুজোর সময় বাজি নিষিদ্ধ হওয়ায় দূষণ এবং সংক্রমণ মাত্রা নিন্মগামী হয়েছে। এবার, লোকাল ট্রেন চালু হবার পরবর্তী সময়ে যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে থাকে, তাহলে নিশ্চিত ভাবে করোনাকে জয় করবে বাংলা।