cpm
নিজস্ব প্রতিনিধি: ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের আগে একটি দৃশ্য দেখে রাজ্য তথা গোটা দেশ হতবাক হয়ে গিয়েছিল। একই মঞ্চে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং রাহুল গান্ধী। সিপিএমের বুদ্ধদেবের গলায় উত্তরীয় পরিয়ে দিচ্ছেন কংগ্রেসের রাহুল। এও কী সম্ভব? সেই প্রশ্ন প্রত্যাশিতভাবেই ওঠে রাজ্য জুড়ে। এরপর অবশ্য কংগ্রেস ও সিপিএমের আসন সমঝোতা বাংলায় স্থায়ী হয়নি। তবে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ফের তারা কাছাকাছি এসেছে। আর চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনেও জোট বেঁধেছে সিপিএম ও কংগ্রেস। প্রকাশ কারাট, বৃন্দা কারাট লবিকে কার্যত পুরো সাইড করে দিয়ে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির নেতৃত্বে এই অসম্ভব কাজটা দেশজুড়ে আজ সম্ভব হয়েছে।
কেরলে কংগ্রেস ও সিপিএম সরাসরি লড়াই করলেও পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, রাজস্থান, বিহার-সহ বেশ কিছু রাজ্যে তারা জোট বেঁধেই লড়ছে। যদিও প্রথম থেকেই এর বিরোধিতা করে এসেছেন সিপিএমের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট। তিনি যখন সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন সেই সময় ২০০৮ সালে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ-১ সরকারের উপর থেকে সিপিএম সমর্থন তুলে নেয়। এরপর ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ও তৃণমূল জোট বেঁধে লড়ে। তাতে সিপিএম তথা বামেরা রাজ্যে ১৫ টি আসনে থেমে যায়। সেই পতনের শুরু, এরপর রক্তক্ষরণ আর বন্ধ করতে পারেনি আলিমুদ্দিন। এই পরিস্থিতিতে ইয়েচুরি লবি মনে করছে বিজেপি ও তৃণমূলকে রুখতে কংগ্রেসের মতো ধর্মনিরপেক্ষ দলের সঙ্গে জোট করে এগোনোটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। তবে শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, কেরল বাদ দিয়ে বহু রাজ্যে এই পথে হেঁটে মসৃণ ভাবে সিপিএম জোট গঠন করতে পেরেছে কংগ্রেসের সঙ্গে। এটাই ইয়েচুরির সাফল্য। লাল ঝান্ডা আবার রাজনৈতিক ময়দানে গর্বের সঙ্গে উড়ুক, এমনটাই চান দলের কর্মী-সমর্থকরা। সেখানে একার শক্তিতে হারানো জায়গা পুনরুদ্ধার করা যে সম্ভব নয় সেটা ইয়েচুরি বহুদিন আগেই বুঝেছিলেন। কিন্তু কারাট লবিকে সেটা বোঝাতে পারেননি তিনি। উল্লেখ্য দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে সিপিএমের মধ্যে ইয়েচুরি লবি ও কারাট লবি প্রবলভাবে বিরাজমান। সকলেই মনে করেন ইয়েচুরি অনেক বেশি সহনশীল ও বাস্তব মেনে চলা ব্যক্তি। তাই কারাট লবি না চাইলেও আজ রাজ্যে রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হয়েছে সিপিএমের। এটা নিঃসন্দেহে ইয়েচুরির বড় কৃতিত্ব হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।